পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রকৃতির প্রতিশোধ প্রথম দৃশ্য গুহা সন্ন্যাসী কোথা দিন, কোথা রাত্রি, কোথা বর্ষ মাস ! অবিশ্রাম কালস্রোত কোথায় বহিছে সৃষ্টি যেথা ভাসিতেছে তৃণপুঞ্জসম ! আঁধারে গুহার মাঝে রয়েছি। একাকী, আপনাতে বসে আছি আপনি অটল । অনাদি কালের রাত্রি সমাধিমগনা নিশ্বাস করিয়া রোধ পাশে বসে আছে । শিলার ফাটল দিয়া বিন্দু বিন্দু করি ঝরিয়া পড়িছে বারি। আদ্র গুহাতলে । স্তব্ধ শীতজলে পড়ি অন্ধকার-মাঝে প্রাচীন ভেকের দল রয়েছে ঘুমায়ে । বাদুড় গুহায় পশি সুদূর হইতে অমানিশীথের বার্তা আনিছে বহিয়া । কখনো বা কোনো দিন কে জানে কেমনে একটি আলোর রেখা কোথা হতে আসে, দিবসের গুপ্তচর রজনীর মাঝে একটুকু উকি মেরে যায় পলাইয়া । বসে বসে প্রলয়ের মন্ত্র পড়িতেছি, তিল তিল জগতেরে ধবংস করিতেছি, সাধনা হয়েছে সিদ্ধ, কী আনন্দ আজি । জগৎ-কুয়াশা-মাঝে ছিনু মগ্ন হয়ে, অদৃশ্যে আঁধারে বসি সুতীক্ষা কিরণে ছিড়িয়া ফেলেছি সেই মায়া-আবরণ, জগৎ চরণতলে গিয়াছে মিলায়েসহসা প্ৰকাশ পাই দীপ্ত মহিমায় । বসে বসে চন্দ্র সর্য দিয়েছি নিবায়ে, একে একে ভাঙিয়াছি বিশ্বের সীমানা, দৃশ্য শব্দ স্বাদ গন্ধ গিয়েছে ছুটিয়া, গেছে ভেঙে আশা ভয় মায়ার কুহক । কোটি-কোটি-যুগ-ব্যাপী সাধনার পরে, যুগান্তের অবসানে, প্ৰলয়সলিলে