পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\OGO বালিকা । সন্ন্যাসী । বালিকা । সন্ন্যাসী । বালিকা । সন্ন্যাসী । वाक्लिका । পথিক । রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী চতুর্থ দৃশ্য পথপার্শ্বে বালিকার ভগ্নকুটির পিতা ! আহা, পিতা বলে কে ডাকিলি ওরে ! সহসা শুনিয়া যেন চমকি উঠিনু। শুধু বলে দাও মোরে আশ্রয় কোথায় । কে আমারে ডেকে নেবে, কাছে করে নেবে, মুখ তুলে মুখপানে কে চাহিবে মোর ? আশ্রয় কোথায় পাবি এ সংসারমাঝে ! এ জগৎ অন্ধকার প্রকাণ্ড গহবরআশ্রয় আশ্রয় বলে শত লক্ষ প্ৰাণী বিকট গ্রাসের মাঝে ধেয়ে পড়ে গিয়া, বিশাল জঠরকুণ্ডে কোথা পায় লোপ | মধুর দুৰ্ভিক্ষরাশি রেখেছে সাজায়ে, তাই চারি দিক হতে আসিছে অতিথি । যত খায় ক্ষুধা জ্বলে, বাড়ে অভিলাষ, অবশেষে সাধ যায় রাক্ষসের মতো জগৎ মুঠায় করে মুখেতে পুরিতে । হেথা হতে চলে আয়- চলে আয় তোরা । এখানে তো সকলেই সুখে আছে পিতা । দূরেতে দাড়িয়ে আমি চেয়ে চেয়ে দেখি ! হায় হায়, ইহাদের বুঝাব কেমনে ! সুখ দুঃখ সে তো, বাছা, জগতের পীড়া ! জগৎ জীবন্ত মৃত্যু— অনন্ত যন্ত্রণা ! মরণ মরিতে চায়, মরিছে না। তবু— চিরদিন মৃত্যুরূপে রয়েছে বঁাচিয়া । জগৎ মৃত্যুর নদী চিরকাল ধরে পড়িছে। সমুদ্রমাঝে, ফুরায় না। তবুপ্রতি ঢেউ, প্রতি তৃণ, প্ৰতি জলকণা কিছুই থাকে না, তবু সে থাকে সমান ! বিশ্ব মহা মৃতদেহ, তারি। কীট তোরা দুদণ্ড ফুরায়ে যাবে কিলিবিলি করি, আবার মৃতের মাঝে রহিবি মরিয়া । কী কথা বলিছ, পিতা, ভয় হয় শুনে । পথে একজন ভিক্ষুক পথিকের প্রবেশ আশ্রয় কোথায় পাব ? আশ্রয় কোথায় ?