পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VOO সন্ন্যাসী । রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী তোদের সে মেঘময় মায়াদ্বীপগুলি । সেথা হতে কারা তোরা বাশিটি বাজায়ে আজিও ডাকিস মোরে ! আমি ফিরিব না । বন্দী করে রেখেছিলি মায়ামুগ্ধ করে, পালায়ে এসেছি আমি, হয়েছি। স্বাধীন । তীরে বসে গা তোদের মায়াগানগুলি— অনন্তের পানে আমি চলেছি ভাসিয়া । মুখেতে পড়েছে তোর চাদের কিরণ । কাছে আসিয়া গান পড়িতেছে মনে, গাই বসে পিতা ! 5R মেঘেরা চলে চলে যায়, চাদেরে ডাকে “আয় আয়’ । ঘুমঘোরে বলে চাদ, “কোথায়— কোথায় !" না জানি কোথা চলিয়াছে, কী জানি কী যে সেথা আছে, আকাশের মাঝে চাদ চারি দিকে চায় । সুদূরে— অতি— অতি দূরে, বুঝি। রে কোন সুরপুরে তারাগুলি ঘিরে বসে বঁাশরি বাজায় । মেঘেরা। তাই হেসে হেসে । আকাশে চলে ভেসে ভেসে, নুকিয়ে চাদের হাসি চুরি করে যায়। এ কী রে চলেছি কোথা, এসেছি কোথায় ? বুঝি আর আপনারে পারি। নে রাখিতে । বুঝি মরি, ডুবি, বুঝি লুপ্ত হয়ে যাই । ওরে কোন অতলেতে যেতেছি। তলায়ে— সর্বাঙ্গে চাপিছে ভার, আঁখি মুদে আসে । চৌদিকে কী যেন তোরে আসিছে ঘিরিয়া ! কোথায় রাখিলি তোর পালাবার পথ ! ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে যে রে যেতেছিস চলি, সহসা চরণে কোথা লাগিবে আঘাত, বিনাশের মাঝখানে উঠিবি জাগিয়া । এখনি ছিড়িয়া ফেল স্বপনের মায়া । চল তোর নিজ রাজ্যে অনন্ত আঁধারে । যত চন্দ্ৰ সূৰ্য সেথা ডুবে নিবে যাবে। ক্ষুদ্র এ আলোতে এসে হনুদিশেহারা, আঁধার দেয় না কভু পথ ভুলইয়া ।