পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8. V রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী প্রথম দৃশ্য প্রথম দৃশ্যে মায়াকুমারীগণের আবির্ভাব । মায়াকুমারীগণ কুহকাশক্তিপ্রভাবে মানব-হৃদয়ে নানাবিধ মায়া সৃজন করে । হাসি, কান্না, মিলন, বিরহ, বাসনা, লজ্জা, প্রেমের মোহ এ-সমস্ত মায়াকুমারীদের ঘটনা । একদিন নব বসন্তের রাত্রে তাহারা স্থির করিল, প্রমোদপুরের যুবক-যুবতীদের নবীন হৃদয়ে নবীন প্রেম রচনা করিয়া তাহারা মায়ার খেলা খেলিবে। দ্বিতীয় দৃশ্য নবযৌবনবিকাশে গ্রন্থের নায়ক অমর সহসা হৃদয়ের মধ্যে এক অপূর্ব আকাঙক্ষা অনুভব করিতেছে। সে উদাসভাবে জগতে আপন মানসী মূর্তির অনুরূপ প্রতিমা খুঁজিতে বাহির হইতেছে । এ দিকে শান্তা আপন প্ৰাণমন অমরকেই সমপণ করিয়াছে । কিন্তু চিরদিন নিতান্ত নিকটে থাকতে শান্তার প্রতি আমরের প্ৰেম জন্মিতে অবসর পায় নাই । অমর শাস্তার হৃদয়ের ভাব না বুঝিয়া চলিয়া গেল । মায়াকুমারীগণ পরিহাসচ্ছলে গাহিল— কাছে আছে দেখিতে না পাও, কাহার সন্ধানে দূরে যাও ! তৃতীয় দৃশ্য প্রমদার কুমারীহািদয়ে প্রেমের উন্মেষ হয় নাই । সে কেবল মনের আনন্দে হাসিয়া খেলিয়া বেড়ায় । সখীরা ভালোবাসার কথা বলিলে সে অবিশ্বাস করিয়া উড়াইয়া দেয় । অশোক ও কুমার তাহার নিকটে আপন প্রেম ব্যক্ত করে, কিন্তু সে তাহাতে ভুক্ষেপ করে না । মায়াকুমারীগণ হাসিয়া বলিল, তোমার এ গর্ব চিরদিন থাকিবে না। — প্রেমেরু ফান্দ পাতা ভুবনে কে কোথা ধরা পড়ে কে জানে । গরব সব হায় কখন টুটে যায়, সলিল বহে যায় নয়নে । চতুর্থ দৃশ্য অমর পৃথিবী খুঁজিয়া কাহারও সন্ধান পাইল না। অবশেষে প্রমদার ক্রীড়াকাননে আসিয়া দেখিল, প্রমদার প্ৰেমলাভে অকৃতাৰ্থ হইয়া অশোক আপন মর্মব্যথা পোষণ করিতেছে । আমর বলিল, যদি ভালোবাসিয়া কেবল কষ্টই সাের তবে ভালোবাসিবার প্রয়োজন কী ? কেন-ৰৌ লোকে সাধ করিয়া ভালোবাসে অমর বুঝিতেই পারিল না। এমন সময়ে সখীদের লইয়া প্রমী কাননে প্রবেশ করিল। প্রমদাকে দেখিয়া অমরের মনে সহসা এক নূতন আনন্দ নূতন প্রাণের সঞ্চার হইল। প্রমদা দেখিল আর-সকলেই তৃষিত ভ্ৰমরের ন্যায় তাহার চারি দিকে ফিরিতেই কেবল অমর একজন অপরিচিত যুবক দূরে দাড়াইয়া আছে। সে আকৃষ্টহৃদয়ে সখীদ বলিল, “উহাকে একবার জিজ্ঞাসা করিয়া আয় ও কী চায় !’ সখীদের প্রশ্নের উত্তরে অমর্ণে