পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৮

রাজা ও রানী প্ৰথম অঙ্ক প্রথম দৃশ্য জলন্ধর প্রাসাদের এক কক্ষ বিক্রমদেব ও দেবদত্ত দেবদত্ত | মহারাজ, এ কী উপদ্রব ! বিক্রমদেব | হয়েছে কী ! দেবদত্ত । আমাকে বরিবে নাকি পুরোহিতপদে ? কী দোষ করেছি। প্ৰভো ? কবে শুনিয়াছ ত্ৰিষ্টুভ অনুষ্ঠুভ এই পাপমুখে ? তোমার সংসর্গে পড়ে ভুলে বসে আছি যত যাগযজ্ঞবিধি । আমি পুরোহিত ? এক বই পিতা নয় তারি নাম ভুলি, দেবতা তেত্ৰিশ কোটি গড় করি সবে । স্কন্ধে ঝুলে পড়ে আছে শুধু পৈতেখানা তেজোহীন ব্ৰহ্মাণ্যের নির্বিষ খোলস | বিক্রমদেব । তাই তো নিৰ্ভয়ে আমি দিয়েছি তোমারে পৌরোহিত্যভার । শাস্ত্ৰ নাই, মন্ত্র নাই, নাই কোনো ব্ৰহ্মণ্য—বালাই । (नदष्ट । তুমি চাও নখদন্তভাঙা এক পোষা পুরোহিত ! বিক্রমদেব । পুরোহিত, একেকটা ব্ৰহ্মদৈত্য যেন । একে তো আহার করে রাজস্কন্ধে চেপে সুখে বারো মাস, তার পরে দিন রাত অনুষ্ঠান, উপদ্রব, নিষেধ, বিধান, অনুযোগ, অনুস্বর-বিসর্গের ঘটা— দক্ষিণায়-পূর্ণ হস্তে শূন্য আশীর্বাদ । দেবদত্ত । শাস্ত্ৰহীন ব্ৰাহ্মণের প্রয়োজন যদি আছেন ত্ৰিবেদী- অতিশয় সাধুলোক, সর্বদাই রয়েছেন জপমালা হাতে ক্রিয়াকর্ম নিয়ে ; শুধু মন্ত্ৰ-উচ্চারণে লেশমাত্র নাই তার ক্রিয়াকর্মজ্ঞান ।