পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8GO রবীন্দ্র-রচনাবলী হেরো ওই আসিছেন মন্ত্রী, স্তৃপকার রাজ্যভার স্কন্ধে নিয়ে । পলায়ন করি । দেবদত্ত । রানীর রাজত্বে তুমি লও গে আশ্রয় । ধাও অন্তঃপুরে । অসম্পূর্ণ রাজকাৰ্য যত যায় দিন । তোমার দুয়ার ছড়ি ক্রমে উঠিবে সে উর্ধর্বদিকে, দেবতার বিচার-আসন-পানে । বিক্রমদেব | এ কি উপদেশ ? দেবদত্ত । না রাজন, প্ৰলাপবচন । যাও তুমি, কাল নষ্ট হয় । [বিক্রমদেবের প্রস্তান মন্ত্রীর প্রবেশ মন্ত্রী । ছিলেন না মহারাজ ? দেবদত্ত | করেছেন অন্তর্ধান অন্তঃপুর-পানে । মন্ত্রী । হা বিধাতঃ, এ রাজ্যের কী দশা করিলে ! কোথা রাজা, কোথা দণ্ড, কোথা সিংহাসন ! শ্মশানভূমির মতো বিষগ্ন বিশাল রাজ্যের বক্ষের পরে সগর্বে দাড়ায়ে বধির পাষাণ রুদ্ধ অন্ধ অন্তঃপুর । রাজশ্ৰী দুয়ারে বসি অনাথার বেশে কঁদে হাহাকার-রবে । দেবদত্ত | দেখে হাসি আসে । রাজা করে পলায়ন, রাজ্য ধায় পিছে রাজ্য ও রাজায় মিলে লুকোচুরি খেলা । মন্ত্রী । এ কি হাসিবার কথা ব্ৰাহ্মণঠাকুর ? দেবদত্ত । না হাসিয়া করিব কী ? অরণ্যে ক্ৰন্দন সে তো বালকের কাজ । দিবসরজনী বিলাপ না হয় সহ্য, তাই মাঝে মাঝে রোদনের পরিবর্তে শুষ্ক শ্বেত হাসি জমাট অশ্রুর মতো তুষারকঠিন । কী ঘটেছে বলো শুনি । মন্ত্রী । জান তো সকলি । রানীর কুটুম্ব যত বিদেশী কাশ্মীরী দেশ জুড়ে বসিয়াছে। রাজার প্রতাপ ভাগ করে লইয়াছে খণ্ড খণ্ড করি, বিষ্ণুচক্রে ছিন্ন মৃত সতীদেহ-সম |