পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8@文 রবীন্দ্র-রচনাবলী নন্দলাল। কিছু না, খিদের কাছে পাপ নেই রে বাবা ! জানিস তো অগ্নিকে বলে পাবক, অগ্নিতে সকল পাপ নষ্ট করে । জঠরাগির বাড়া তো আর অগ্নি নেই । অনেকে । আগুন । তা ঠিক বলেছ। বেঁচে থাকো ঠাকুর । তবে তাই হবে । তা, আমরা আগুনই লাগিয়ে দেব । ওরে, আগুনে পাপ নেই রে । এবার ওঁদের বড়ো বড়ো ভিটতে ঘুঘু চৱাব। কুঞ্জর । আমার তিনটে সড়কি আছে । মনসুখ । আমার একগাছা লাঙল আছে, এবার তাজ-পরা মাথাগুলো মাটির ঢেলার মতো চয়ে ফেলব । শ্ৰীহর কলু । আমার একগাছ বড়ো কুডুল আছে, কিন্তু পালাবার সময় সেটা বাড়িতে ফেলে এসেছি । l হরিদীন কুমোর ; ওরে, তোরা মরতে বসেছিস না কি ? বলিস কী রে ! আগে রাজাকে জানা, তার পরে যদি না শোনে তখন অন্য পরামর্শ হবে । কিনু নাপিত । আমিও তো সেই কথা বলি । কুঞ্জর । আমিও তো তাই ঠাওরাচ্ছি। শ্ৰীহর । আমি বরাবর বলে আসছি, ঐ কায়স্থর পো'কে বলতে দাও । আচ্ছা, দাদা, তুমি বাজাকে ভয় করবে না ? মনুরাম কায়স্থ । ভয় আমি কাউকে করি নে ! তোরা লাঠ করতে যাচ্ছিাস, আর আমি দুটো কথা বলতে পারি। নে ? মনসুখ । দাঙ্গণ করা এক, আর কথা বলা এক | এই তো বরাবর দেখে আসছি— হাত চলে, কিন্তু মুখ চলে না । কিনু ! মুখের কোনো কাজটাই হয় না— আন্নাও জোটে না, কথাও ফোটে না ! কুঞ্জর । আচ্ছা, তুমি কী বলবে বলো । মনুরাম ; আমি ভয় করে বলব না, আমি প্রথমেই শাস্ত্র বলব । শ্ৰীহর | বল কী ! তোমার শাস্তর জানা আছে ? আমি তো তাই গোড়াগুড়িই বলছিলাম কায়ঃ পো'কে বলতে দাও— ও জানে-শোনে । মনুরাম । আমি প্রথমেই বলব— অতিন্দপে হত। লঙ্কা, অতিমানে চ কোরবঃ । অতিদানে বলিবদ্ধঃ সর্বমত্যন্তংগৰ্হিতম ৷ হরিদান । হা, এ শাস্ত্ৰ বাটে । কিনু । (ব্রাহ্মণের প্রতি) কেমন খুড়ো, তুমি তো ব্ৰাহ্মণের ছেলে, এ শাস্ত্র কি না ? তুমি তো ঐ সমস্তই বোঝা । / ジ নন্দ । হা— তা— ইয়ে— ওর নাম কী— তা বুঝি বৈকি। কিন্তু রাজা যদি না বোঝে, তুমি * করে বুঝিয়ে দেবে বলে তো শুনি । মনুরাম । অর্থাৎ, বাড়াবাড়িটে কিছু নয় । জওহর তাতি । ঐ অতবড়ো কথাটার এইটুকু মানে হল ? শ্ৰীহর । তা না হলে আর শাস্তর কিসের ? নন্দ । চাষাভূযোর মুখে যে কথাটা ছােট্ট বড়োলোকের মুখে সেইটেই কত বড়ো শোনায় । মনসুখ । কিন্তু কথাটা ভালো, “বাড়াবাড়ি কিছু নয়’ শুনে রাজার চােখ ফুটবে । জওহর । কিন্তু ঐ একটাতে হবে না, আরো শাস্তর চাই । মনুরাম । তা আমার পুঁজি আছে, আমি বলব—