পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা ও রানী বনমাঝে কি মনোমাঝে ? যাব কি যাব না মিছে এ ভাবনা, মিছে মারি লোকলাজে । কে জানে কোথা সে বিরহভূতাশে ফিরে অভিসারসাজে বনমাঝে কি মনোমাঝে ? দ্বিতীয় সখী । ওলো থাম— ঐ দেখা যুবরাজ কুমারসেন এসেছেন । তৃতীয় সখী । চল চল ভাই, আমরা একটু আড়ালে দাড়াই গে । তোরা পারিস, কিন্তু কে জানে ভাই, যুবরাজের সামনে যেতে আমার কেমন করে । দ্বিতীয় সখী । কিন্তু কুমার আজ হঠাৎ অসময়ে এলেন কেন ? প্রথম সখী । ওলো, এর কি আর সময়-অসময় আছে ? রাজার ছেলে বলে কি পঞ্চশর ওকে ছেড়ে কথা কয় ? থাকতে পারবে কেন ? তৃতীয় সখী । চল ভাই, আড়ালে চল । ইলা । ইলা । 8brፄ { অন্তরালে গমন কুমারসেন ও ইলার প্রবেশ থাক নাথ, আর বেশি বোলো না। আমারে । বিবাহ স্থগিত রবে কিছুকাল, এর বেশি কী আর শুনিব ? এমনি বিশ্বাস মোর 'পরে রেখে চিরদিন । মন দিয়ে মন বোঝা যায়, গভীর বিশ্বাস শুধু নীরব প্ৰাণের কথা টেনে নিয়ে আসে । প্ৰবাসীরে মনে কোরো এই উপবনে, এই নিঝরিণীতীরে, এই লতাগৃহে, এই সন্ধ্যালোকে, পশ্চিমগগনপ্রান্তে ওই সন্ধ্যাতারা-পানে চেয়ে । মনে কোরো, আমিও প্রদোষে, প্রবাসে তরুর তলে একেলা বসিয়া ওই তারকার 'পরে তোমারি আঁখির তারা পেতেছি দেখিতে । মনে কোরো মিশিতেছে এই নীলাকাশে পুষ্পের সৌরভ-সম তোমার আমার প্ৰেম । এক চন্দ্ৰ উঠিয়াছে উভয়ের বিরহরজনী-’পরে । জানি, জানি নাথ, জানি আমি তোমার হৃদয় । যাই তবে, অয়ি তুমি অন্তরের ধন, জীবনের মৰ্মস্বরূপিণী, অয়ি সবার অধিক ! সখীগণের প্রবেশ দ্বিতীয় সখী । হায় একি শুনি !