পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা ও রানী 8à Y বিক্রমদেব । সেনাপতি, পালাও, পালাও । চলো চলো সৈন্য লয়ে- আর কি কোথাও নাই শত্ৰু, আর কেহ নাহি কি বিদ্রোহী ? সাক্ষাৎ ? কাহার সাথে ? রমণীর সনে সাক্ষাতের এ নহে সময় । সেনাপতি । মহারাজ বিক্রমদেব । চুপ করো সেনাপতি, শোনো যাহা বলি । রুদ্ধ করো দ্বার- এ শিবিরে শিবিকার প্ৰবেশ নিষেধ । সেনাপতি । যে আদেশ মহারাজ ! দ্বিতীয় দৃশ্য দেবদত্তের কুটির দেবদত্ত ও নারায়ণী দেবদত্ত । প্ৰিয়ে, তবে অনুমতি করো— দাস বিদায় হয় । নারায়ণী । তা যাও-না, আমি তোমাকে বেঁধে রেখেছি না কি ? দেবদত্ত | ঐ তো, ঐজন্যেই তো কোথাও যাওয়া হয়ে ওঠে না- বিদায় নিয়েও সুখ নেই । যা বলি তা করো। ঐখানটায় আছাড় খেয়ে পড়ে । বলো, হা হতোহস্মি, হা ভগবতি ভবিতব্যতে ! হা ভগবান মকরকেতন ! নারায়ণী । মিছে বোকো না । মাথা খাও, সত্যি করে বলে কোথায় যাবে। দেবদত্ত | রাজার কাছে । নারায়ণী । রাজা তো যুদ্ধ করতে গেছে। তুমি যুদ্ধ করবে নাকি ? দ্রোণাচার্য হয়ে উঠেছ ? দেবদত্ত । তুমি থাকতে আমি যুদ্ধ করব ? যা হোক, এবার যাওয়া যাক । নারায়ণী । সেই অবধি তো ঐ এক কথাই বলছি । তা যাও-না ! কে তোমাকে মাথার দিব্যি দিয়ে ধরে রেখেছে ? দেবদত্ত । হায় মকরকেতন, এখানে তোমার পুস্পশরের কর্ম নয়- একেবারে আস্ত শক্তিশেল না। ছাড়লে মর্মে গিয়ে পৌছয় না । বলি ও শিখরদশনা, পাকবিম্বাধরোষ্ঠী, চোখ দিয়ে জল-টল কিছু বেরোবে কি ? সেগুলো শীঘ্র শীঘ্ৰ সেরে ফেলো- আমি উঠি । A. নারায়ণী । পোড়া কপাল ! চোখের জল ফেলব কী দুঃখে ? হা গা, তুমি না গেলে কি রাজার যুদ্ধ চলবে না ? তুমি কি মহাবীর ধূম্রলোচন হয়েছ ? দেবদত্ত । আমি না গেলে রাজার যুদ্ধ থামবে না । মন্ত্রী বার বার লিখে পাঠাচ্ছে রাজ্য ছারখারে যায়, কিন্তু মহারাজ কিছুতেই যুদ্ধ ছাড়তে চান না । এ দিকে বিদ্রোহ সমস্ত থেমে গেছে ।