পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী “সখা, আজ বিদায়, বিদায় ।” ধীরে ধীরে সন্ধ্যার বাতাস প্ৰতিদিন আসে মোর পাশ । র্দেখে, আমি বাতায়নে, অশ্রু ঝরে দু নয়নে, ফেলিতেছি দুখের নিশ্বাস । কথা কহে সকরুণ স্বরে, কানে কানে বলে, “হায় হায় !” কোমল কপোল দিয়া কপোল চুম্বন করি অশ্রুবিন্দু সুধীরে শুকায় । সবাই আমার মন বুঝে, সবাই আমার দুঃখ জানে, সবাই করুণ আঁখি মেলি চেয়ে থাকে এই মুখপানে । যে কেহ আমার ঘরে আসে সবাই আমারে ভালোবাসেতবে কেন তুমি এলে হেথা এ আমার সাধের আবাসে ? ফেরো ফেরো, ও নয়ন রসহীন ও বয়ন আনিয়ে না। এ মোর আলয়ে— আমরা সখারা মিলি আছি হেথা নিরিবিলি আপনার মনোদুঃখ লয়ে । এমনি হয়েছে শান্ত মন, ঘুচেছে দুঃখের কঠোরতা ; ভালো লাগে বিহঙ্গের গান, ভালো লাগে তটিনীর কথা । ভালো লাগে কাননে দেখিতে বসন্তের কুসুমের মেলা, ভালো লাগে সারাদিন বসে দেখিতে মেঘের ছেলেখেলা । এইরূপে সায়াহ্নের কোলে রচেছি গোধূলি-নিকেতন, দিবসের অবসান-কালে পাশে হেথা রবির কিরণ । আসে হেথা অতি দূর হতে পাখিদের বিরামের তান, ম্ৰিয়মাণ সন্ধ্যা-বাতাসের থেকে থেকে মরণের গান ।