পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(, ) О রবীন্দ্র-রচনাবলী ষষ্ঠ দৃশ্য অরণ্য শুষ্ক পৰ্ণশয্যায় কুমারসেন শয়ন । সুমিত্ৰা আসীন কুমারসেন । সুমিত্ৰা । কুমারসেন । সুমিত্ৰা । কুমারসেন । কত রাত্ৰি ? রাত্রি আর নাই ভাই ! রাঙা হয়ে উঠেছে আকাশ ! শুধু বনচ্ছায়া অন্ধকার রাখিয়াছে বেঁধে । সারা রাত্ৰি জেগে বসে আছ, বোন, ঘুম নেই চোখে ? জাগিয়াছি দুঃস্বপন দেখে । সারা রাত মনে হয় শুনি যেন পদশব্দ কার শুষ্ক পল্লবের ’পারে । তরু-অন্তরালে শুনি যেন কাহাদের চুপিচুপি কথা, বিজন মন্ত্রণা । শ্রান্ত আঁখি যদি কভু মুদে আসে, দারুণ দুঃস্বপ্ন দেখে কেঁদে জেগে উঠি । সুখসুপ্ত মুখখানি তব দেখে পুন প্ৰাণ পাই প্ৰাণে । ് দুভাবনা দুঃস্বপ্নজননী । ভেবো না আমার তরে বোন ! সুখে আছি । মগ্ন হয়ে জীবনের মাঝখানে, কে জেনেছে জীবনের সুখ ? মরণের তটপ্ৰান্তে বসে, এ যেন গো প্ৰাণপণে জীবনের একান্ত সম্ভোগ । এ সংসারে যত সুখ, যত শোভা, যত প্ৰেম আছে, সকলি প্ৰগাঢ় হয়ে যেন প্রতি বিন্দুটিতে যত মিষ্ট আছে, সব আমি পেতেছি আস্বাদ । ঘন বন, তুঙ্গ শৃঙ্গ, উদার আকাশ, উচ্ছসিত নিঝরিণী— আশ্চর্য এ শোভা । অযাচিত ভালোবাসা অরণ্যের পুষ্পবৃষ্টি-সম অবিশ্রাম হতেছে বর্ষণ । চারি দিকে ভক্ত প্ৰজাগণ । তুমি আছ প্রীতিময়ী শিয়রে বসিয়া । উড়িবার আগে বুঝি জীবনবিহঙ্গ বিচিত্ৰ-বরন পাখা করিছে বিস্তার ॥— ওই শোনো কাঠুরিয়া গান গায়- শোনা যাবে রাজ্যের সংবাদ ।