পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বউ-ঠাকুরানীর হাট \Ն Հ Գ নিরাপদে পলাইতে পারিবি, কাল আসিস দেখি, অন্ধকারে কেমন না ধরা পড়িস।” ” রাজা । হা হা হা হয় | মন্ত্রী । হাে হাে হাে হাে হাে । 6नना°डिी । श् ि। রাজা বলিলেন, “তার পর ?” রামাই দেখিল, এখনো রাজার তৃপ্তি হয় নাই । “জানি না, কী কারণে চোরের যথেষ্ট ভয় হইল না । তাহার পররাত্রেও ঘরে আসিল । গিন্নি কহিলেন, “সর্বনাশ হইল ওঠে । কর্তা কহিলেন, “তুমি ওঠো-না৷ ” গিন্নি কহিলেন, “আমি উঠিয়া কী করিব।” কর্তা বলিলেন, ‘কেন, ঘরে একটা আলো জ্বালাও-না। কিছু যে দেখিতে পাই না ।” গিন্নি বিষম ক্রুদ্ধ। কর্তা ততোধিক ক্রুদ্ধ হইয়া কহিলেন, দেখো দেখি, তোমার জন্যই তো যথাসর্বস্ব গেল । আলোটা জ্বালাও বন্দুকটা আনো | ইতিমধ্যে চাের কাজকর্ম সারিয়া কহিল, “মহাশয়, এক ছিলিম তামাকু খাওয়াইতে পারেন ? বড়ো পরিশ্রম হইয়াছে।” কর্তা বিষম ধমক দিয়া কহিলেন, ‘রোস বেটা ! আমি তামাক সাজিয়া দিতেছি। কিন্তু আমার কাছে আসিবি তো এই বন্দুকে তোর মাথা উড়াইয়া দিব ।” তামাক খাইয়া চোর কহিল, “মহাশয়, আলোটা যদি জ্বলেন তো উপকার হয় । সিধকাঠিটা পড়িয়া গিয়াছে খুজিয়া পাইতেছি না ।” সেনাপতি কহিলেন, “বেটার ভয় হইয়াছে। তফাতে থাক, কাছে আসিস না । বলিয়া তাড়াতাড়ি আলো জ্বালিয়া দিলেন । ধীরে সুস্থে জিনিসপত্র বাধিয়া চোর চলিয়া গেল। কর্তা গিন্নিকে কহিলেন, “বেটা বিষম ভয় পাইয়াছে।” ” রাজা ও মন্ত্রী হাসি সামলাইতে পারেন না । ফর্নাণ্ডিজ থাকিয়া থাকিয়া মাঝে মাঝে “হিঃ হিঃ” রাজা কহিলেন, “রামাই, শুনিয়াছ আমি শ্বশুরালয়ে যাইতেছি ?” রামাই মুখভঙ্গি করিয়া কহিল, “অসােরং খলু সংসােরং সারং শ্বশুরমন্দিরং (হাস্য। প্রথমে রাজা, পরে মন্ত্রী, পরে সেনাপতি ।) কথাটা মিথ্যা নহে। (দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া) শ্বশুরমন্দিরের সকলই সারআহারটা, সমাদরটা ; দুধের সরটি পাওয়া যায়, মাছের মুড়োটি পাওয়া যায় ; সকলই সার পদার্থ ; কেবল সর্বাপেক্ষা অসার ঐ স্ত্রীটা ।” রাজা হাসিয়া কহিলেন, “সে কী হে, তোমার অর্ধাঙ্গ-” রামাই জোড়হস্তে ব্যাকুলভাবে কহিল, “মহারাজ, তাহাকে অর্ধাঙ্গ বলিবেন না । তিন জন্ম তপস্যা করিলে আমি বরঞ্চ একদিন তাহার অর্ধাঙ্গ হইতে পারিব, এমন ভরসা আছে । আমার মতো পাচটা অর্ধাঙ্গ জুড়িলেও তাহার আয়তনে কুলায় না !” (যথাক্রমে হাস্য () কথাটার রস আর সকলেই বুঝিল, কেবল মন্ত্রী পারিলেন না, এই নিমিত্ত মন্ত্রীকে সর্বাপেক্ষা অধিক হাসিতে হইল । পূজা করলেন, “আমি তাে শুনিয়াছ, তােমার ব্রাহ্মণী বড়েই শান্তস্বভাবা ও থািকয়ায় বিশেষ יין রমাই। সে কথায় কাজ কী । ঘরে আর সকল রকম জঞ্জােলই আছে, কেবল আমি তিষ্ঠিতে প না | প্রত্যুষে গৃহিণী এমনি ঝাটাইয়া দেন যে, একেবারে মহারাজের দুয়ারে আসিয়া পড়ি । এইখানে কথাপ্রসঙ্গে রমাইয়ের ব্ৰাহ্মণীর পরিচয় দিই । তিনি অত্যন্ত কৃশাঙ্গী ও দিনে দিনে ক্রমেই আরো ক্ষীণ হইয়া যাইতেছেন । রামাই ঘরে আসিলে তিনি কোথায় যে আশ্রয় লইবেন ভাবিয়া পান না । রাজসভায় রামাই একপ্রকার ভঙ্গিতে দাত দেখায় ও ঘরে আসিয়া গৃহিণীর কাছে আর-একপ্রকার ভঙ্গিতে দাত দেখায়। কিন্তু গৃহিণীর যথার্থ স্বরূপ বর্ণনা করিলে নাকি হাস্যরস না আসিয়া করুণ-রস আসে, এই নিমিত্ত রাজসভায় রামাই তাহার গৃহিণীকে স্থূলকায়া ও উগ্ৰচণ্ডা করিয়া বৰ্ণনা করেন, রাজা ও মন্ত্রীরা হাসি রাখিতে পারেন না । অগ্নি থামিলে পর রাজা কহিলেন, "ওহে রমাই, তােমাকে যাইতে হইবে, সেনাপতিকেও সঙ্গে יין محص