পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(S রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী মাঝে মাঝে একদিন আকাশেতে নাই আলো, পড়িয়া মেঘের ছায়া কালো জল হয় কালো । আঁধার সলিল-’পরে ঝরে ঝর বারি করে ঝর ঝরঝর ঝর, দিবানিশি অবিরলবরষার দুখ-কথা, বরষার আঁখিজল । শুয়ে শুয়ে আনমনে দিবানিশি তাই শুনি একটি একটি ক’রে দিবানিশি তাই গুনি, তারি সাথে মিলাইয়া কল কল গান গাই— ঝর ঝর কল কল- দিন নাই, রাত নাই । এমনি নিজেরে লয়ে রয়েছি নিজের কাছে, আঁধার সলিল-’পরে আঁধার জাগিয়া আছে । এমনি নিজের কাছে খুলেছি নিজের প্রাণ, এমনি পরের কাছে শুনেছি নিজের গান । জি এ প্ৰভাতে রবির কর কেমনে পশিল প্ৰাণের পর, কেমনে পশিল। গুহার আঁধারে প্ৰভাত-পাখির গান । না জানি কেন রে এতদিন পরে জাগিয়া উঠিল। প্ৰাণ । জাগিয়া উঠেছে প্ৰাণ, ওরে উথলি উঠেছে বারি, ওরে প্রাণের বাসনা প্ৰাণের আবেগ রুধিয়া রাখিতে নারি । থর থর করি কঁাপিছে ভূধর, ফুলিয়া ফুলিয়া ফেনিল সলিল গরজি উঠিছে দারুণ রোষে । হেথায় হোথায় পাগলের প্রায় বাহিরিতে চায়, দেখিতে না পায় কোথায় কারার দ্বার | প্ৰভাতেরো যেন লাইতে কড়িয়া উঠে শূন্যপানে— পড়ে আছাড়িয়া করে শেষে হাহাকার । প্ৰাণের উল্লাসে ছুটিতে চায়, ভূধরের হিয়া টুটিতে চায়, আলিঙ্গন তরে উর্ধের্ব বাহু তুলি আকাশের পানে উঠিতে চায় ।