পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৯৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্ৰন্থপরিচয় ܠܟܠܬ ‘বউ-ঠাকুরানীর হাট’ ১২৮৯ সালের পৌঁষে গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশিত হয় । রবীন্দ্র-রচনাবলীতে পরবতী শ্রাবণ ১৩৩৯-এ মুদ্রিত স্বতন্ত্র সংস্করণের পাঠ অনুসৃত । প্রথম ও প্ৰচল সংস্করণের কতকগুলি সাধারণ পার্থক্য নির্দেশ করা গেল প্রথম সংস্করণের প্রথম পরিচ্ছেদ বর্তমান সংস্করণে নাই। কাহিনীর শেষ দৃশ্যের এক অংশ প্রথম পরিচ্ছেদে নিবদ্ধ করিয়া, পূর্বে তাহা চত্বারিংশ পরিচ্ছেদেও অন্যভাবে লেখা হইয়াছিল প্ৰথম সংস্করণের সপ্তদশ পরিচ্ছেদ বর্তমান স্বতন্ত্র সংস্করণে নাই । প্রথম সংস্করণের ষড়বিংশ পরিচ্ছেদের প্রথমাংশ পূর্বতন (প্রথম সংস্করণে ২৫শ ও বর্তমান সংস্করণে ২৩শ) পরিচ্ছেদের শেষে যুক্ত হইয়াছে অবশিষ্ট অংশ বর্জিত । এতদব্যতীত, বিভিন্ন পরিচ্ছেদে অনেক অংশ পরিবর্জিত ও পরিবর্ধিত । বউ-ঠাকুরানীর হাটের কাহিনী অবলম্বনে কবি ‘প্ৰায়শ্চিত্ত’ (১৩১৬) নাটক রচনা করেন ; “প্ৰায়শ্চিত্ত’ পরে “পরিত্রাণ’ (১৩৩৬) নাটকে পরিবর্তিত হয় । রাজর্ষি ‘রাজর্ষি ১২৯৩ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় । রাজর্ষির গল্পটি অংশতঃ স্বপ্নলব্ধ, ঐ স্বপ্নের সহিত ত্রিপুরার পুরাবৃত্ত -যোগে ইহার রচনা । এই স্বপ্ন সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথ জীবনস্মৃতিতে লিখিয়াছেন “ছবি ও গান এবং কড়ি ও কোমল -এর মাঝখানে বালক নামে একখানি মাসিক পত্র এক বৎসরের ওষধির মতো ফসল ফলাইয়া লীলাসম্বরণ করিল - দুই-এক সংখ্যা বালক বাহির হইবার পর দুই-এক দিনের জন্য দেওঘরে রাজনারায়ণ বাবুকে দেখিতে যাই । কলিকাতায় ফিরিবার সময় রাত্রের গাড়িতে ভিড় ছিল ; ভালো করিয়া ঘুম হইতেছিল না— ঠিক চোখের উপরে আলো জ্বলিতেছিল। মনে করিলাম ঘুম যখন হইবেই না তখন এই সুযোগে বালকের জন্য একটা গল্প ভাবিয়া রাখি । গল্প ভাবিবার ব্যর্থ চেষ্টার টানে গল্প আসিল না, ঘুম আসিয়া পড়িল । স্বপ্ন দেখিলাম, কোন এক মন্দিরের সিঁড়ির উপর বলির রক্তচিহ্ন দেখিয়া একটি বালিকা অত্যন্ত করুণ ব্যাকুলতার সঙ্গে তাহার ব্যাপকে জিজ্ঞাসা করিতেছে— বাবা, একি ! এ যে রক্ত ! বালিকার এই কাতরতায় তাহার বাপ অন্তরে ব্যথিত হইয়া অথচ বাহিরে রাগের ভান করিয়া কোনোমতে তার প্রশ্নটাকে চাপা দিতে চেষ্টা করিতেছে। জাগিয়া উঠিয়াই মনে হইল এটি আমার স্বপ্নলব্ধ গল্প । এমন স্বপ্নে পাওয়া গল্প এবং অন্য লেখা আমার আরো আছে । এই স্বপ্নটির সঙ্গে ত্রিপুরার রাজা গোবিন্দমাণিক্যের পুরাবৃত্ত মিশাইয়া রাজর্ষি গল্প মাসে মাসে লিখিতে লিখিতে বালকে বাহির করিতে লাগিলাম।” -বালক অধ্যায়। জীবনস্মৃতি ত্রিপুরার মহারাজ বীরচন্দ্ৰমাণিক্য কবিকে গোবিন্দমাণিক্যের ইতিহাস পাঠাইয়াছিলেন ; তাহা রাজর্ষির প্রথম সংস্করণে পরিশিষ্টরূপে প্ৰকাশিত । নক্ষত্ররায়ের ত্রিপুরা অধিকার ও গোবিন্দমাণিক্যের স্ব-ইচ্ছায় সিংহাসনত্যাগ বীণত নক্ষত্ররায়ের মৃত্যুর পর গোবিন্দমাণিক্যের রাজ্যভার-পুনরাগ্রহণ প্রভৃতি এই ইতিবৃত্তে আছে । বিভিন্ন সংস্করণে রাজৰ্ষির অনেকাংশ বর্জিত এবং চত্বারিংশ ও একচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ সম্পূর্ণ বর্জিত হয়। ১৩৩১ সালের বিশ্বভারতী-সংস্করণে ঐ দুইটি পরিচ্ছেদ ও অন্যান্য অনেক বর্জিত SV)