পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অচলায়তন ৩২৯ বাদল বাতাস যেমন ডাকাত আকাশ লুটে ফেরে। হারে রে রে রে রে আমায় রাখবে ধরে কে রে । দাবানলের নাচন, যেমন সকল কানন ঘেরে । বিজু যেমন বেগে অট্টহাস্য সকল বিষ্মবাধার বক্ষ চেরে । প্রথম শোণপাংশু । বেশ বেশ পঞ্চকদাদা, তা হলে চলে আমাদের বনভোজনে । পঞ্চক । বেশ, চলো । (একটু থামিয়া দ্বিধা করিয়া) কিন্তু ভাই, ঐ বন পর্যন্তই যাব, ভোজন পর্যন্ত N দ্বিতীয় শোণপাংশু । সে কি হয় ! সকলে মিলে ভোজন না করলে আনন্দ কিসের ! পঞ্চক । না রে, তোদের সঙ্গে ঐ জায়গাটাতে আনন্দ চলবে না । দ্বিতীয় শোণপাংশু । কেন চলবে না ? চালালেই চলবে । পঞ্চক । চালালেই চলে এমন কোনো জিনিস আমাদের ত্ৰিসীমানায় আসতে পারে না তা জানিস ? মারলে চলে না, ঠেললে চলে না, দশটা হাতি জুড়ে দিলে চলে না, আর তুই বলিস। কিনা চালালেই চলবে । তৃতীয় শোণপাংশু । আচ্ছা, ভাই, কাজ কী । তুমি বনেই চলো, আমাদের সঙ্গে খেতে বসতে शत कीं । 曾 পঞ্চক। খুব হবে রে খুব হবে । আজ খেতে বসবই, খাবই- আজ সকলের সঙ্গে বসেই খাবআনন্দে আজ ক্রিয়াকল্পতরুর ডালে ডালে আগুন লাগিয়ে দেব- পুড়িয়ে সব ছাই করে ফেলব। দাদাঠাকুর । আমি রোজই খাই । পঞ্চক । তবে তুমি আমাকে খেতে বলছি না কেন । দাদাঠাকুর । আমি কাউকে বলি নে ভাই, নিজে বসে যাই । পঞ্চক । না দাদা, আমার সঙ্গে আমন করলে চলবে না। আমাকে তুমি হুকুম করো, তা হলে আমি বেঁচে যাই । আমি নিজের সঙ্গে কেবলই তর্ক করে মরতে পারি নে। দাদাঠাকুর । অত সহজে তোমাকে বেঁচে যেতে দেব না। পঞ্চক। যেদিন তোমার আপনার মধ্যে হুকুম উঠবে সেইদিন আমি হুকুম করব । একদল শোণিপাংশুর প্রবেশ দাদাঠাকুর । কী রে, এত ব্যস্ত হয়ে ছুটে এলি কেন ? প্রথম শোণিপাংশু । চণ্ডককে মেরে ফেলেছে । দাদাঠাকুর । কে মেরেছে ? দ্বিতীয় শোণপাংশু । স্থবিরাপত্তনের রাজা । পঞ্চক । আমাদের রাজা ? কেন, মারতে গেল কেন । দ্বিতীয় শোণপাংশু । স্থবিরক হয়ে ওঠবার জন্যে চণ্ডক বনের মধ্যে এক পোড়ো মন্দিরে তপস্যা করছিল । ওদের রাজা মন্থরগুপ্ত, সেই খবর পেয়ে তাকে কেটে ফেলেছে। তৃতীয় শোিণপাংশু। আগে ওদের দেশের প্রাচীর পয়ত্ৰিশ হাত উচু ছিল, এবার আশি হাত উচু