পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্ৰন্থপরিচয় । brS& আমাদের বাংলাভাষার ব্যাকরণ যাহারা গড়িতে যাইবেন তাহদের ইহা মনে রাখা উচিত যে, তাহারা ভাষায় যাহা আছে তাঁহারই প্রয়োগ-প্রকৃতি গঠনপ্রণালীর নিয়মাদি কিরূপ তাহা ব্যাখ্যা করিবেন মাত্ৰ ; কেহ কিছু গড়িবেন না । -- শিক্ষার বিস্তারের জন্য রচনার ভাষা যত কথিত ভাষার নিকটবতী হইবে ততই সুফল ফলিবে । ভাষা অর্থে যদ্দ্বারা ভাষণ করা যায়, সুতরাং ত্যাহা কথিত ভাষার নিকটবতী হওয়াই উচিত ।

  • “তৎপরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় বলেন। হীরেন্দ্ৰবাবু যাহা বলিয়াছেন, প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয়ে তদন্তিরিক্ত বলিবার আর কিছুই নাই ; নিঃশেষ করিয়া সকল কথার উত্তর দিয়াছেন।-- ভাষা যে আমরা নিজে ইচ্ছা করিলে গড়িতে পারি ভাঙিতে পারি এরূপ নহে। সংস্কৃতের সহিত বাংলার ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ সহজে বুঝা যায়, কিন্তু কোথায় কোথায় কিরূপ পার্থক্য আছে সেগুলি লক্ষ করাই এখন আবশ্যক। তবেই ইহার বর্তমান আকৃতি জানা যাইবে, তবেই ব্যাকরণ গঠনের চেষ্টা হইতে পরিবে । আমারও মনে হয় যে, বাংলা ব্যাকরণ সংস্কৃতমূলক হইবে কেন । সংস্কৃতশব্দের রাহুল্য বাংলায় বেশি বলিয়াই ভাষার গঠন্যদিও সংস্কৃত ব্যাকরণানুসারে করিতে হইবে ? বাংলাভাষার প্রকৃতি কাঠামো যে সম্পূর্ণ তফাত ইহা না বুঝিলে চলিবে কেন । তবে সংস্কৃত ব্যাকরণ আলোচনা করা আবশ্যক, নতুবা আমরা ঠিক পথে চলিতে পারিব না ।”**

সভাপতি সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাহার বক্তব্যে বলেন : --- আজকার প্রবন্ধের আলোচনায় দেখা গেল, মত দ্বিবিধ হইয়াছে। সংস্কৃতানুসারে ব্যাকরণ আর বাংলাভাষার প্রকৃতিগত ব্যাকরণ । উভয়ের সামঞ্জস্য আবশ্যক ।- আমার নিজের মনের ঝোক শাস্ত্রীমহাশয়ের মতের সঙ্গেই মিলে । লিখিত ভাষা ও কথিত ভাষায় প্ৰভেদ যত কম থাকে ততই ভালো । পরিষদের পঞ্চম মাসিক অধিবেশনে (১২ আশ্বিন ১৩০৮) রবীন্দ্রনাথ বাংলা কৃৎ ও তদ্ধিত প্ৰবন্ধ পাঠ করেন । ব্যোমকেশ মুস্তকী মহাশয় এই প্ৰবন্ধের “সংগ্ৰহাতিরিক্ত আরো কতকগুলি মুকুঞ্চি” সভায় উপস্থিত করেন। উৎ রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধের পরিশিষ্ট্ররূপে গৃহীত ও | সভার আলোচনায় ইন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন : -- বাংলা বর্ণমালা সংস্কারের পূর্বে বাংলা ব্যাকরণ ভাববার সময়ই এখনো হয় নি- । আমার বােধ হয়, ব্যাকরণের চেষ্টা রেখে দিয়ে এখন পরিষৎ শব্দ সংগ্ৰহ করুন। সতীশচন্দ্ৰ বিদ্যাভূষণ মহাশয় বলেন : -- প্ৰাদেশিক শব্দ সংগ্ৰহ করিয়া রবীন্দ্রবাবুর এই চেষ্টার পূর্ণতা সম্পাদন করা উচিত - শাস্ত্রী মহাশয় ও রবীন্দ্রবাবু বাংলাভাষার প্রকৃতিনির্ণয়ে যেরূপ পরিশ্রম করিতেছেন, তাহাতে তাহাদিগকে বাংলাভাষার পাণিনি বলিলেই হয়। ] • - একমাস পূর্বে আমি এ বিষয়ে আলোচনা আরম্ভ করি, রবীন্দ্রবাবুর মতো লোকে যে এত শীঘ্ৰ সহায়তা করবেন। সে আশা করি নাই । আরো অনেকে প্ৰস্তুত হইতেছেন ।... যে-সকল বাংলাশব্দের উপর কাহারও কোনোদিন দৃষ্টি পড়ে নাই, রবীন্দ্ৰবাবুর এই প্ৰবন্ধের পর তাহদের প্রতি অনেকেরই দৃষ্টি পড়িবে। ২৮ দ্রষ্টব্য : বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদের কার্যবিবরণ- ১৩০৮ (সা পদ প) । । ২৯ বাংলা কৃৎ ও তদ্ধিত— বোমকেশ মুস্তকী : সা পপ, ৮ম ভাগ, ৪র্থ সংখ্যা, পৃ: ২২৯-২৪০ ৷৷ यडया : जन्नामचीन भड़वा, थे, १ २8>