পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S$ 2 রবীন্দ্র-রচনাবলী রামানন্দ তাকিয়ে আছেন জবাকুসুমসঙ্কাশ স্বর্যোদয়ের দিকে । মনে মনে বলছেন, ‘হে দেব, তোমার যে কল্যাণতম রূপ সে তো আমার অন্তরে প্রকাশ পেল না | ঘোচাও তোমার আবরণ ? সূর্য উঠল শালবনের মাথার উপর । জেলের নৌকায় পাল দিলে তুলে, বকের পাতি উড়ে চলেছে সোনার আকাশ বেয়ে ও পারে জলার দিকে । এখনো স্নান হল না সারা । শিষ্য শুধালো, ‘বিলম্ব কেন প্রভু, পূজার সময় যায় বয়ে ।” রামানন্দ উত্তর করলেন, ‘শুচি হয় নি ততু, গঙ্গা রইলেন আমার হৃদয় থেকে দূরে । শিষ্য বসে ভাবে, এ কেমন কথা । সর্ষেখেতে রৌদ্র ছড়িয়ে গেল । মালিনী খুলেছে ফুলের পসরা পথের ধারে, গোয়ালিনী যায় দুধের কলস মাথায় নিয়ে । গুরুর কী হল মনে, উঠলেন জল ছেড়ে । চললেন বনঝাউ ভেঙে গাঙশালিকের কোলাহলের মধ্য দিয়ে । শিষ্য শুধালে, “কোথায় যাও প্রভূ, ও দিকে তো নেই ভদ্রপাড়া।” গুরু বললেন, ‘চলেছি স্নানসমাপনের পথে ।