পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉般b** রবীন্দ্র-রচনাবলী রসিক। ভাই, সইতে পারলুম না, কী করি। বছরে বছরেই তোর বোনদের বয়স বাড়ছে, বড়োমা আমারই দোষ দেন কেন । বলেন, দুবেল বসে বসে কেবল খাচ্ছ, মেয়েদের জন্তে দুটাে বর দেখে দিতে পার না। আচ্ছ ভাই, আমি না খেতে রাজি আছি, তা হলেই বর জুটবে না তোর বোনদের বয়স কমতে থাকবে ? এ দিকে যে-দুটির বর জুটছে না তারা তো দিব্যি খাচ্ছেন-দাচ্ছেন। শৈলভাই, কুমারসম্ভবে পড়েছিল, মনে আছে তো?— স্বয়ং বিশীর্ণক্রমপর্ণবৃত্তিত পরা হি কাষ্ঠী তপসস্তয়া পুনঃ । । তদপ্যপাকীর্ণমত: প্রিয়ংবদাং বদন্ত্যপর্ণেতি চ তাং পুরাবিদ: | তা ভাই, দুর্গ নিজের বর খুজতে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে তপস্যা করেছিলেন ; কিন্তু নাৎনীদের বর জুটছে না বলে আমি বুড়োমানুষ খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেব, বড়োমার এ কী বিচার । আহা শৈল, ওটা মনে আছে তো ? তদপ্যপাকীর্ণমতঃ প্রিয়ংবদাং— শৈলবালা । মনে আছে দাদা, কিন্তু কালিদাস এখন ভালে লাগছে না । রসিক। তা হলে তো অত্যন্ত দুঃসময় বলতে হবে। শৈলবালা । তাই তোমার সঙ্গে পরামর্শ আছে । রসিক। তা, রাজি আছি ভাই । যেরকম পরামর্শ চাও তাই দেব । যদি ই৷ বলতে চাও ই বলব, না বলতে চাও না বলব। আমার এই গুণটি আছে । আমি সকলের মতের সঙ্গে মত দিয়ে যাই বলেই সবাই আমাকে প্রায় নিজের মতোই বুদ্ধিমান ভাবে । অক্ষয়। তুমি অনেক কৌশলে তোমার পসার বঁচিয়ে রেখেছ, তার মধ্যে তোমার এই টাক একটি । 尊 রসিক। আর একটি হচ্ছে ‘যাবৎ কিঞ্চিন্ন ভাষতে’— তা, আমি বাইরের লোকের কাছে বেশি কথা কই নে । 會 ኳ শৈলবালা। সেইটে বুঝি আমাদের কাছে পুষিয়ে নাও ? রসিক । তোদের কাছে যে ধরা পড়েছি । শৈলবালা। ধরা যদি পড়ে থাক তো চলে, যা বলি তাই করতে হবে । রসিক। ভয় নেই দিদি। এমন দুটি কুলীনের ছেলে জোগাড় করেছি কন্যাদায়ের দুঃখের চেয়েও যারা হাজারগুণ অসহ । তাদের দেখলে বড়োমা তার মেয়েদের জন্য এ বাড়িতে চিরকুমারী-সভা স্থাপন করবেন। যাই, তিনি ডেকে পাঠিয়েছেন । [ প্রস্থান