পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিরকুমার-সভা ১৭১ শৈলবালা । এই বুঝি ! অক্ষয়। চারটিতে মিলে স্মরণশক্তি জুড়ে বসে আছ, আর কিছু কি মনে রাখতে দিলে ?— গান - সকলি ভুলেছে ভোলা মন, ভোলে নি ভোলে নি শুধু ঐ চন্দ্রানন। [ শৈল ও রসিকের প্রস্থান পুরবালার প্রবেশ অক্ষয়। স্বামীই স্ত্রীর একমাত্র তীর্থ। মান কি না । পুরবালা । আমি কি পণ্ডিতমশায়ের কাছে শাস্ত্রের বিধান নিতে এসেছি। আমি মার সঙ্গে আজ কাশী চলেছি এই খবরটি দিয়ে গেলুম। অক্ষয় । খবরটি সুখবর নয়— শোনবামাত্র তোমাকে শাল-দোশালা বকশিশ দিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে না। পুরবালা। ইস, হৃদয় বিদীর্ণ হচ্ছে ? না ? সহ করতে পারছ না ? অক্ষয় । আমি কেবল উপস্থিত বিচ্ছেদটার কথা ভাবছি নে। এখন তুমি দু দিন না রইলে, আরও কজন রয়েছেন, এক রকম করে এই হতভাগ্যের চলে যাবে। কিন্তু এর পরে কী হবে। দেখো, ধর্মে-কর্মে স্বামীকে এগিয়ে যেয়ে না ; স্বর্গে তুমি যখন ডবল প্রমোশন পেতে থাকবে আমি তখন পিছিয়ে থাকব— তোমাকে বিষ্ণুদূতে রথে চড়িয়ে নিয়ে যাবে, আর আমাকে যমদূতে কানে ধরে হাটিয়ে দৌড় করাবে। গান স্বর্গে তোমায় নিয়ে যাবে উড়িয়ে, পিছে পিছে আমি চলব খুড়িয়ে, ইচ্ছা হবে টিকির ডগা ধরে বিষ্ণুদূতের মাথাটা দিই গুড়িয়ে । পুরবালা । আচ্ছা আচ্ছা, থামো । অক্ষয়। আমি থামব, কেবল তুমিই চলবে? উনবিংশ শতাব্দীর এই বন্দোবস্ত ? নিতান্তই চললে ? 臀 পুত্ববালা । চললুম। অক্ষয় । আমাকে কার হাতে সমর্পণ করে গেলে ।