পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

总忽8 রবীন্দ্র-রচনাবলী মতো এক চালে আমাদের চলতে হবে, অনভ্যাস বা স্বাভাবিক দুর্বলতা -বশত র্যাদের পিছিয়ে পড়বার সম্ভাবনা আছে তাদের নিয়ে ভারগ্রস্ত হলে আমাদের সমস্তই ব্যর্থ হবে। " এমন সময় নির্মলা অকুষ্ঠিত মর্যাদার সহিত গৃহের মধ্যে প্রবেশ করিয়া নমস্কার করিয়া দাড়াইল হঠাৎ সকলেই স্তম্ভিত হইয়া গেল। অশ্রুপূর্ণ ক্ষোভে তাহার কণ্ঠস্বর আর্দ্র নির্মলা। আপনাদের কী উদ্দেশু এবং আপনারা দেশের কাজে কত দূর পর্যন্ত যেতে প্রস্তুত আছেন তা আমি কিছুই জানি নে, কিন্তু আমি আমার মামাকে জানি— তিনি যে পথে যাত্রা করে চলেছেন আপনারা কেন আমাকে সে পথে তার অনুসরণ করতে বাধা দিচ্ছেন। ነ শ্ৰীশ নিরুত্তর, পূর্ণ কুষ্ঠিত-অনুতপ্ত, বিপিন প্রশান্ত-গম্ভীর, চন্দ্রবাবু সুগভীর চিন্তামগ্ন নির্মল । ( পূর্ণ এবং শ্ৰীশের প্রতি অশ্রজলস্নাত কটাক্ষপাত করিয়া) আমি যদি কাজ করতে চাই, যিনি আমার আশৈশবের গুরু মৃত্যু পর্যন্ত যদি সকল শুভচেষ্টায় তার অনুবর্তিনী হতে ইচ্ছা করি, আপনার কেবল তর্ক করে আমার অযোগ্যতা প্রমাণ করতে চেষ্টা করেন কেন । আপনারা আমাকে কী জানেন । শ্ৰীশ স্তব্ধ। পূর্ণ ঘর্মাক্ত নির্মলা। আমি আপনাদের কুমারসভা বা অন্য কোনো সভ্য জানি নে, কিন্তু র্যার শিক্ষায় আমি মানুষ হয়েছি তিনি যখন কুমারসভাকে অবলম্বন করেই তার জীবনের সমস্ত উদেশু-সাধনে প্রবৃত্ত হয়েছেন, তখন এই কুমারসভা থেকে আপনার আমাকে দূরে রাখতে পারবেন না। (চন্দ্রবাবুর দিকে ফিরিয়া) তুমি যদি বল আমি তোমার কাজের যোগ্য নই তা হলে আমি বিদায় হব, কিন্তু এরা অামাকে কী জানেন । এর কেন আমাকে তোমার অনুষ্ঠান থেকে বিচ্ছিন্ন করবার জন্তে সকলে মিলে তর্ক করছেন। শ্ৰীশ । ( বিনীত মৃদুস্বরে) মাপ করবেন, আমি আপনার সম্বন্ধে কোনো তর্ক করিনি, আমি সাধারণত স্ত্রীজাতি সম্বন্ধেই বলছিলুম। নির্মলা। আমি স্ত্রীজাতি পুরুষজাতির প্রভেদ নিয়ে কোনো বিচার করতে চাই নে— আমি নিজের অন্ত:করণ জানি এবং যার উন্নত দৃষ্টাস্তকে আশ্রয় করে রয়েছি তার অন্তঃকরণ জানি, কাজে প্রবৃত্ত হতে এর বেশি আমার আর কিছু জানবার দরকার নেই। চন্দ্রৰাবু নিজের দক্ষিণ করতল চোখের অত্যন্ত ৰাছে লইয়া নিরীক্ষণ করিয়া দেখিতে লাগিলেন পূর্ণ খুব চমৎকার করিয়া একটা কিছু বলিবার ইচ্ছ। করিল— কিন্তু তাহার মুখ দিয়। কোনো কথাই বাহির হইল ন৷