পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*१8 রবীন্দ্র-রচনাবলী রসিক । দেখেছি বৈকি, নইলে কি ওই রুমালখানার জন্যে এত লড়াই করি। আর ওই-যে “ন’ অক্ষরের কথাগুলো আমার মাথার মধ্যে এখনও এক ঝাক ভ্রমরের মতো গুঞ্জন করে বেড়াচ্ছে তাদের সামনে কি একটি কমলবনবিহারিণী মানসীমূর্তি নেই। শ্ৰীশ। রসিকবাবু, আপনার ওই মগজটি একটি মৌচাক-বিশেষ, ওর ফুকোরে ফুকোরে কবিত্বের মধু। আমাকে স্বদ্ধ মাতাল করে দেবেন দেখছি। [ দীর্ঘনিশ্বাসপতন পুরুষবেশী শৈলবালার প্রবেশ শৈলবালা । আমার আসতে অনেক দেরি হয়ে গেল, মাপ করবেন শ্ৰীশবাবু। শ্ৰীশ । আমি এই সন্ধেবেলায় উৎপাত করতে এলুম, আমাকেও মাপ করবেন অবলাকান্তবাবু। শৈলবালা । রোজ সন্ধেবেলায় যদি এই রকম উৎপাত করেন তা হলে মাপ করব, নইলে নয় । শ্ৰীশ । আচ্ছ রাজি, কিন্তু এর পরে যখন অনুতাপ উপস্থিত হবে তখন প্রতিজ্ঞ স্মরণ করবেন। শৈলবালা । আমার জন্যে ভাববেন না, কিন্তু আপনার যদি অনুতাপ উপস্থিত হয় তা হলে আপনাকে নিষ্কৃতি দেব । শ্ৰীশ । সেই ভরসায় যদি থাকেন তা হলে অনন্তকাল অপেক্ষা করতে হবে। শৈলবালা। রসিকদাদা, তুমি শ্ৰীশবাবুর পকেটের দিকে হাত বাড়াচ্ছ কেন । বুড়ে বয়সে গাটকাট ব্যাবসা ধরবে নাকি । রসিক। না ভাই, সে ব্যাবসা তোদের বয়সেই শোভা পায়। একথান রুমাল নিয়ে শ্ৰীশবাবুতে আমাতে তক্রার চলছে, তোকে তার মীমাংসা করে দিতে হবে। শৈলবালা । কিরকম । রসিক। প্রেমের বাজারে বড়ো মহাজনি করবার মূলধন আমার নেই। আমি খুচরো মালের কারবারী— রুমালট, চুলের দড়িট, ছেড়া কাগজে দু-চারটে হাতের অক্ষর, এই-সমস্ত কুড়িয়ে-বাড়িয়েই আমাকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। শ্ৰীশবাবুর যেরকম মূলধন আছে তাতে উনি বাজার-স্থদ্ধ পাইকেরি দরে কিনে নিতে পারেন— রুমাল কেন, সমস্ত নীলাঞ্চলে অর্ধেক ভাগ বসাতে পারেন। আমরা যেখানে চুলের দড়ি গলায় জড়িয়ে মরতে ইচ্ছে করি উনি যে সেখানে আগুলফবিলম্বিত চিকুররাশির স্বগন্ধ ঘনাদ্ধকারের মধ্যে সম্পূর্ণ অন্ত যেতে পারেন। উনি উদ্ধৃবৃত্তি করতে আসেন কেন। ঐশ | অবলাকাস্তবাবু, আপনি তো নিরপেক্ষ ব্যক্তি, রুমালখানা এখন আপনার