পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২ষ্ট৪ রবীন্দ্র-রচনাবলী রসিক। মাটির দেবতাকে নৈবেদ্য দেবার সুবিধা এই যে, সেটি সম্পূর্ণ ফিরে পাওয়া যায়— আমাকেও নির্ভয়ে বরমাল্য দিতে পারিস, যখনই দরকার হবে তখনই ফিরে পাবি। তার চেয়ে ভাই, আমাকে একটা গলাবন্ধ বুনে দিস, বরমাল্যের চেয়ে সেটা বুড়ে মানুষের কাজে লাগবে । নীরবালা । তা দেব— একজোড়া পশমের জুতো বুনে রেখেছি সেও শ্রীচরণেষু হবে । রসিক । আহা, কৃতজ্ঞতা একেই বলে। কিন্তু নীরু, আমার পক্ষে গলাবন্ধই যথেষ্ট— আপাদমস্তক নাই হল, সেজন্যে উপযুক্ত লোক পাওয়া যাবে, জুতোটা তারই জন্যে রেখে দে । নীরবালা। আচ্ছ, তোমার বক্তৃতাও তুমি রেখে দাও । রসিক । দেখেছিস ভাই শৈল, আজকাল নীরুরও লজ্জা দেখা দিয়েছে— লক্ষণ খারাপ । à. শৈলবালা। নীরু, তুই করছিস কী। আবার এ ঘরে এসেছিস ? আজ যে এখানে আমাদের সভা বসবে – এখনই কে এসে পড়বে, বিপদে পড়বি। রসিক। সেই বিপদের স্বাদ ও একবার পেয়েছে, এখন বারবার বিপদে পড়বার জন্যে ছটফট করে বেড়াচ্ছে । নীরবালা । দেখে রসিকদাদা, তুমি যদি আমাকে বিরক্ত কর তা হলে গলাবন্ধ পাবে না বলছি। দেখো দেখি দিদি, তুমিও যদি রসিকদার কথায় ওই রকম করে হাস, তা হলে ওঁর আস্পর্ধ আরও বেড়ে যাবে। Tiffan রসিক। দেখেছিস ভাই শৈল, নীরু আজকাল ঠাটাও সইতে পারছে না, মন এত দুর্বল হয়ে পড়েছে।—নীরুদিদি, কোনো কোনো সময় কোকিলের ডাক শ্রুতিকটু বলে ঠেকে এইরকম শাস্ত্রে আছে। তোর রসিকদাদার ঠাট্টাকেও কি তোর আজকাল কুহুতান বলে ভ্রম হতে লাগল। নীরবালা । সেইজন্যেই তো তোমার গলায় গলাবন্ধ জড়িয়ে দিতে চাচ্ছি— তানট যদি একটু কমে । শৈলবালা । নীরু, আর ঝগড়া করিস নে— আয়, এখনই সবাই এসে পড়বে। [ নীর ও শৈলের প্রস্থান পূর্ণর প্রবেশ রসিক। আস্থন পূর্ণবাবু। h