পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२५२ রবীন্দ্র-রচনাবলী কিন্তু সেই কোমল হৃদয়ের স্নিগ্ধ মধুর ভাবটি আমার কাছে ক্ষণে ক্ষণে তন্নবতামুপৈতি । শ্ৰীশ । আচ্ছা, তিনি— আমি সেই নৃপবালার কথা জিজ্ঞাসা করছি— রসিক । সে আমি বেশ বুঝতেই পারছি। শ্ৰীশ । তা, তিনি— কী আর প্রশ্ন করব। তার সম্বন্ধে যা হয় কিছু বলুন-নী— কাল কী বললেন, আজ সকালে কী করলেন, যত সামান্য হোক আপনি বলুন— আমি শুনি রসিক। ( শ্ৰীশের হাত ধরিয়া ) বড়ো খুশি হলুম শ্ৰীশবাবু, আপনি যথার্থ ভাবুক বটেন— আপনি তাকে কেবল চকিতের মধ্যে দেখে এটুকু কী করে ধরতে পারলেন যে র্তার সম্বন্ধে তুচ্ছ কিছুই নেই। তিনি যদি বলেন ‘রসিকদা ওই কেরোসিনের বাতিটা একটুখানি উসকে দাও তো আমার মনে হয় যেন একটা নতুন কথা শুনলেম আদিকবির প্রথম অনুষ্টুপ ছন্দের মতো। কী বলব শ্ৰীশবাবু, আপনি শুনলে হয়তে হাসবেন, সেদিন ঘরে ঢুকে দেখি নৃপবালা ছুচের মুখে স্বতে পরাচ্ছেন, কোলের উপর বালিশের ওয়াড় পড়ে রয়েছে— আমার মনে হল এক আশ্চর্য দৃপ্ত। কতবার কত দর্জির দোকানের সামনে দিয়ে গেছি, কখনো মুখ তুলে দেখি নি, কিন্তু— শ্ৰীশ । আচ্ছা রসিকবাবু, তিনি নিজের হাতে ঘরের সমস্ত কাজ করেন ? শৈলবালার প্রবেশ শৈলবালা। রসিকদার সঙ্গে কী পরামর্শ করছেন। রসিক। কিছুই না, নিতান্ত সামান্ত কথা নিয়ে আমাদের আলোচনা চলছে, যত দূর তুচ্ছ হতে পারে। চন্দ্র । সভা অধিবেশনের সময় হয়েছে আর বিলম্ব করা উচিত হয় না। পূর্ণবাবু, কৃষিবিদ্যালয় সম্বন্ধে আজ তুমি যে প্রস্তাব উত্থাপন করবে বলেছিলে সেটা আরম্ভ করো । পূর্ণ। ( দণ্ডায়মান হইয়া ঘড়ির চেন নাড়িতে নাড়িতে ) আজ— আজ— (কাশি ) রসিক । ( পাশ্বে বসিয়া মৃদুস্বরে ) আজ এই সভ— পূর্ণ। আজ এই সভা— রসিক। যে নূতন সৌন্দর্য এবং গৌরব লাভ করিয়াছে— পূর্ণ। যে নূতন সৌন্দর্য এবং গৌরব লাভ করিয়াছে— রসিক। প্রথমে তাহারই জন্য অভিনন্দন প্রকাশ না করিয়া থাকিতে পারিতেছি না ।