পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২ রবীন্দ্র-রচনাবলী সুন্দর প্লাটিনমের আঙটির মাঝখানে যেন হীরে । আকাশের সীমা ঘিরে মেঘ, মাঝপানের ফণক দিয়ে রোদদুর আসছে মাঠের উপর। তুহু করে বইছে হt ৪য়, পেপে গাছগুলোর যেন তাতঙ্ক লেগেছে, উত্তরের মাঠে নিমগাছে বেধেছে বিদ্রোহ, তালগাছগুলোর মাথায় বিস্তর বকুনি । বেল এপন আড়াইট । ভিজে বনের ঝলমলে মধ্যাহ্ন উত্তর দক্ষিণের জানল দিয়ে এসে জুড়ে বসেছে আমার সমস্ত মন । জলি নে কেন মনে হয় এই দিন দূর কালের আর কোনে-একটা দিনের মতে । এ-রকম দিন মানে না কোনো দায়কে, এর কাছে কিছুই নেই জরুরি, বর্তমানের নোঙর-ছেড়া ভেসে-যাওয়া এই দিন । একে দেখছি যে অতীতের মরীচিকা বলে সে অতীত কি ছিল কোনো কালে কোনোখানে, সে কি চিরযুগেরই অতীত নয় । প্রেয়সীকে মনে হয় সে আমার জন্মান্তরের জান| — যে কালে স্বর্গ, যে কালে সত্যযুগ, যে কাল সকল কালেরই ধরা-ছোওয়ার বাইরে । তেমনি এই-যে সোনায় পাল্লায় ছায়ায় অালোয় গাথ অবকাশের নেশায় মন্থর আষাঢ়ের দিন বিহবল হয়ে অাছে মাঠের উপর ওড়না ছড়িয়ে দিয়ে, এর মাধুরীকেও মনে হয় আছে তবু নেই, এ আকাশবীণায় গৌড়সারঙের আলাপ, সে আলাপ আসছে সর্বকালের নেপথ্য থেকে । ৭ ভাদ্র ১৩৩৯