পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8bro" r রবীন্দ্র-রচনাবলী করি। কোনো সম্প্রদায়ের লিপিবদ্ধ বিশ্বাসের দ্বারা আমাদের মন যেন সংকুচিত না झम्न । যে মুক্তির বাণী তিনি তার জীবন দিয়ে প্রচার করে গিয়েছিলেন তাকেই আমরা গ্রহণ করব ; সেই তার দীক্ষামন্ত্রটি : ঈশাবাস্তমিদং সৰ্বং । ঈশ্বরের মধ্যে সমস্তকে দেখো । সেই মন্ত্রে তার মন উতলা হয়েছিল। সর্বত্র সকল অবস্থায় আমরা যেন দেখতে পাই তিনি সত্য, জগতের বিচিত্র ব্যাপারের মধ্যে তিনি সত্যকেই প্রকাশ করছেন। কোনো সম্প্রদায় বলতে পারবে না যে সে সত্যকে শেষ করে পেয়েছে। কালে কালে সত্যের নব নব প্রকাশ । এখানে দিনে দিনে আমাদের জীবন সেই সত্যের মধ্যে নূতন নূতন বিকাশ লাভ করবে, এই আমাদের আশা। আমরা এই মুক্তির সরোবরে স্নান করে আনন্দিত হই, সমস্ত সম্প্রদায়ের বন্ধন থেকে নিস্কৃতি লাভ করে আনন্দিত হই। ৭ পৌষ ১৩২০ . মাঘ ১৩২০ প্রতীক্ষা কতদিন নিভৃতে এখানে তার নাম শুনেছি। আজ এই জনকোলাহলে তারই নাম ধ্বনিত হচ্ছে, অফুট কলোচ্ছাসে এই নিঃশব্দ নিস্তন্ধ সন্ধ্যাকাশকে মুখরিত করে তুলছে। এই কোলাহলের ধ্বনি তাকে চারি দিকে বেষ্টন করে উঠেছে । আজ অস্তরে অন্তরে জাগ্রত হয়ে অন্তর্ষামীকে বিরলে স্মরণ করবার দিন নয় ; সংসারতরণীর কর্ণধার হয়ে যিনি সবাইকে নিয়ে চলেছেন আজ তাকে দেখবার দিন। অন্তদিন আকাশের গ্ৰহতারাকে বলগার দ্বারা সংযত করে বিচিত্র বিশ্বরথকে একাকী সেই সারথি নিয়ে গেছেন —রথচক্রের শব্দ ওঠে নি, রাত্রির বিরামের কিছুমাত্র ব্যাঘাত করে নি। আজ নিদ্ৰা দূর হয়েছে, পাখিরা কুলায়ে সন্ত্রস্ত হয়ে উঠেছে। এই কোলাহলে যিনি শাস্তং শিবমৰৈতম্ তিনি স্থিরপ্রতিষ্ঠ হয়ে রয়েছেন । কোলাহলের মর্মে যেখানে নিস্তব্ধ তার আসন আজ আমরা সেইখানেই তাকে প্রণাম করবার জন্য চিত্তকে উজবোধিত করি । আমাদের উৎসবদেবতা কোলাহল নিরস্ত করেন নি, তিনি মানা করেন নি। তার পূজা তিনি সব-শেষে ঠেলে রেখেছেন। যখন রাজা আসেন তখন কত আয়োজন করে আসেন, কত সৈন্তসামস্ত নিয়ে ধ্বজা উড়িয়ে আসেন, যাতে লোকে তাকে না মেনে থাকতে না পারে। কিন্তু, যিনি রাজার রাজা তার কোনো আয়োজন নেই। তাকে