পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী বড়ো বড়ো বঁাশ পুতে জাল পেতেছে জেলে, বাশের ডগায় বসে আছে মাছরাঙা, পাতিহাস ডুবে ডুবে গুগলি তোলে। বেলা দুপুর। লোভ হয় জলের ঝিলিমিলি দেখে— তলায় পাতা ছড়িয়ে শেওলাগুলো দুলতে থাকে, মাছগুলো পেল করে । আরো তলায় অাছে নাকি নাগকন্যা ? সোনার কাকই দিয়ে আঁচড়ায় লম্ব চুল, অঁাকাবঁকা ছায় তার জলের ঢেউয়ে । ছেলেটার খেয়াল গেল ঐখানে ডুব দিতে— ঐ সবুজ স্বচ্ছ জল, সাপের চিক দেহের মতে । ‘কী আছে দেখিই-ন’ সব তাতে এই তার লোভ দিল ডুব, দামে গেল জড়িয়ে-- চেচিয়ে উঠে, খাবি গেয়ে, তলিয়ে গেল কোথায় । ডাঙায় রাখাল চরাচ্ছিল গোরু, জেলেদের ডিঙি নিয়ে টানাটানি করে তুললে তাকে তখন সে নিঃসাড় । তার পরে অনেক দিন ধরে মনে পড়েছে চোথে কী করে সর্ষেফুল দেখে, অঁাধার হয়ে আসে, যে মাকে কচি বেলায় হারিয়েছে তার ছবি জাগে মনে, জ্ঞান যায় মিলিয়ে । ভারী মজা, কী করে মরে সেই মস্ত কথাটা । সাথিকে লোভ দেখিয়ে বলে, একবার দেখ না ডুবে, কোমরে দড়ি বেঁধে, আবার তুলব টেনে।