পুনশ্চ 89
একদিন প্রতিবেশীর বাড়া ভাতে মুখ দিতে গিয়ে
তার দেহান্তর ঘটল । মরণাস্তিক দুঃখেও কোনো দিন জল বেরোয় নি যে ছেলের চোখে
দু দিন সে লুকিয়ে লুকিয়ে কেঁদে কেঁদে বেড়ালো,
মুখে অন্নজল রুচল না, বক্সিদের বাগানে পেকেছে করমচা—
চুরি করতে উৎসাহ হল না। সেই প্রতিবেশীদের ভাগ্নে ছিল সাত বছরের,
তার মাথার উপর চাপিয়ে দিয়ে এল এক ভাঙা হাড়ি ।
হঁাড়ি-চাপা তার কান্না শোনালো যেন ঘানিকলের বঁশি ।
গেরস্তঘরে ঢুকলেই সবাই তাকে দূর দূর করে,
কেবল তাকে ডেকে এনে দুধ খাওয়ায় সিধু গয়লানী । তার ছেলেটি মরে গেছে সাত বছর হল,
বয়সে ওর সঙ্গে তিন দিনের তফাত ।
ওরই মতে কালোকোলে,
নাকটা ওইরকম চ্যাপ্টা । ছেলেটার নতুন নতুন দৌরাত্মি এই গয়লানী মাসীর পরে।
তার বাধা গোরুর দড়ি দেয় কেটে, خ.
তার ভাড় রাখে লুকিয়ে, খয়েরের রঙ লাগিয়ে দেয় তার কাপড়ে । ‘দেখি-না কী হয় তারই বিবিধ-রকম পরীক্ষা ।
তার উপদ্রবে গয়লানীর স্নেহ ওঠে ঢেউ খেলিয়ে ।
তার হয়ে কেউ শাসন করতে এলে সে পক্ষ নেয় ঐ ছেলেটারই ।
অম্বিকে মাস্টার আমার কাছে দুঃখ ক’রে গেল,
‘শিশুপাঠে আপনার লেখা কবিতাগুলো,
পড়তে ওর মন লাগে না কিছুতেই,
এমন নিরেট বুদ্ধি।
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
