পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী গাছের আড়ালে, সামনে বরফের পাহাড় । শোনা গেল আসবে না এবার । ফিরব মনে করছি এমন সময়ে আমার এক ভক্তের সঙ্গে দেখা, মোহনলাল— রোগ মানুষটি, লম্বা, চোখে চশমা, দুর্বল পাকযন্ত্র দাৰ্জিলিঙের হাওয়ায় একটু উৎসাহ পায়। সে বললে, ‘তমুক আমার বোন, কিছুতে ছাড়বে না তোমার সঙ্গে দেখা না করে । মেয়েটি ছায়ার মতে, দেহ যতটুকু না হলে নয় ততটুকু— যতটা পড়াশোনায় ঝোক, আহারে ততটা নয় । ফুটবলের সর্দারের পরে তাই এত অদ্ভূত ভক্তি— মনে করলে, আলাপ করতে এসেছি সে আমার দুর্লভ দয়া । হায় রে ভাগ্যের খেলা ! যেদিন নেমে আসব তার দু দিন আগে তমুক বললে, ‘একটি জিনিস দেব আপনাকে, যাতে মনে থাকবে আমাদের কথা— একটি ফুলের গাছ । এ এক উৎপাত। চুপ করে রইলেম । তমুক বললে, ‘দামি দুর্লভ গাছ, এ দেশের মাটিতে অনেক যত্নে বঁাচে |’ জিগেস করলেম, নামটা কী ? সে বললে ‘ক্যামেলিয়া । 5 - আর-একটা নাম ঝলক দিয়ে উঠল মনের অন্ধকারে । হেসে বললেম, ‘ক্যামেলিয়া, সহজে বুঝি এর মন মেলে না ।” তনুক কী বুঝলে জানি নে, হঠাৎ লজ্জ পেলে, খুশিও হল।