পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 রবীন্দ্র-রচনাবলী মন্তব্য | আধারগ্রন্থ সম্পর্কে পরবর্তী গ্রন্থপরিচয় দ্রষ্টব্য। ১৮৮২ খৃস্টাব্দে বঙ্গীয় এসিয়াটিক সোসাইটিকর্তৃক প্রকাশিত ইহার যে প্রতি শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনে রক্ষিত, তাহার আখ্যাপত্রে পেন্সিলে রবীন্দ্রনাথের ইংরাজি স্বাক্ষর এবং তঁহার হাতেই ১লা ফাল্গুন ১৮৮৪' লেখা। আদ্যন্ত গ্রন্থ কবি-কর্তৃক বিশেষ মনঃসংযোগে অধীত এবং নানা টীকা টিপ্পানী ও ভাযাত্র দিয়া চিহ্নিত। গ্রন্থের বিদ্যাপতি অংশে যে ৮২টি পদ আছে তন্মধ্যে ৫২টি পদ রবীন্দ্রনাথের ভাষান্তর অথবা মন্তব্য -সহ ১৩৪৮ সনের অগ্রহায়ণ-ফাকুন সংখ্যা প্রবাসীতে মুদ্রিত। এ স্থলে সম্পূর্ণ রূপান্তর’গুলি বা অর্থবহ বিশেষ বিশেষ কাব্যখণ্ড মাত্র সংকলিত, এজন্য সংখ্যা ৩৫টির বেশি নহে। যে মৈথিলী পদগুলি সম্পূর্ণ সংকলন করা হইয়াছে, বর্তমান গ্রন্থে তাঁহাদের ক্রমিক সংখ্যা—১, ৭, ৮, ১০-১২, ১৪-২৭, ৩৫। সকল ক্ষেত্রে এগুলিরও সমতই রবীন্দ্রনাথ ভাষান্তরিত বা রূপান্তরিত করিয়াছেন এমন নয়। প্রত্যেক মৈথিলী পদের শেষে, আধারগ্রন্থে উহার যে ক্ৰমিক সংখ্যা তাঁহাই সংকলন করা হইয়াছে। বাংলা রূপান্তরে তাহার অনুবৃত্তি। রবীন্দ্রনাথ গ্ৰীয়ার্সন সাহেবের অর্থ কয়েক স্থলে গ্রহণ করেন নাই মনে হয়। উল্লিখিত তৃতীয় টীকায় তাহার সংশোধন | আধারগ্রন্থের বিস্তারিত সংযোজন-সংশোধন’ মিলাইয়া (সেইসঙ্গে গ্ৰীয়ার্সন সাহেবের স্বচ্ছন্দ ইংরাজি রূপান্তর তথা শব্দসূচী দেখিয়া) পূর্বমুদ্রিত বহুবিধ ভ্ৰান্ত পাঠ ত্যাগ করা হইয়াছে। মূল পদাবলী অংশে ইহার অতিরিক্ত সংশোধন অত্যন্ত বিরল। তৃতীয় এবং চতুর্থ টীকায় যে পাঠান্তর গ্রহণের ইঙ্গিত আছে, তাহা রবীন্দ্রনাথের অভিমত অনুসারী। রবীন্দ্র-রচনার পাঠোদ্ধারেও বহু সংশোধনের অবকাশ ছিল, রবীন্দ্রভবনের গ্ৰন্থখানির সাহায্যে সে বিষয়ে বিশেষ যত্ন করা গিয়াছে। লিপ্যন্তর। একই কালে মিথিলার ও বাংলার লোকপ্রচলিত উচ্চারণ সম্পর্কে সাধারণের মনে যাহাতে ভুল ধারণা না হয়, দেবনাগরী হরপের বিন্দুচিহ্নকে নির্বিচারে অনুস্বারে পরিণত করা হয় নাই। এজন্যই মংডল, সংচি, নংদী, কুংভ, বংধু, কংত, সুংদরি বা সুংদৱী না হইয়া- মণ্ডল, সঞ্চি, ননদী (নানদী), কুম্ভ, বন্ধু, কান্ত (কান্ত), সুন্দরি বা সুন্দরী হইয়াছে। মৈথিলী পদের বানান আর সকল দিক দিয়া অবিকৃত রাখার চেষ্টা হইয়াছে ; উহা প্রধানতই উচ্চারণ-সংগীত, দেবভাষার বুৎপত্তির ভয়ে ভীত নহে। সমাসবদ্ধ পদ হইলেই সংযুক্তভাবে ছাপা হইবে। এ রীতি না থাকায়, বিরহ শয়ন, সখী বচন, রাধা কৃষ্ণ বিলাস বর্ণন, সরোবর ঘাট বাট কণ্টক তরু, কুচ জুগ কুৰুম রাগ- এরূপ আধারগ্রন্থে ছিল আর বর্তমান সংকলনেও আছে। রবীন্দ্রনাথকৃত ভাষান্তর, বানানের বা বিরামচিহেল্ম অধুনা-প্রচলিত রীতির সহিত সংগতি রাখিয়াই ছাপা হইয়াছে। সমাসবদ্ধ শব্দাবলীও একত্র সংহত বা হাইফেনের সংকেতে পরস্পর যুক্ত। হিন্দী বা মৈথিলী ভাষায় অন্তঃস্থ ‘ব’এর উচ্চারণ স্বতন্ত্র। মূলে যেখানে যেখানে ঐ বর্ণের ব্যবহার, লিপ্যন্তরে (মৈথিলী পদে) ৱি’ হরপটি ব্যবহৃত হইয়াছে। : ‘রভসি ২" বা “যাও ২’ আধারগ্রন্থে যদিবা থাকে, বর্তমান সংকলনে ‘রভসি রিভসি’ বা “যাও যাও" আকার नश्शाछ - श८ दक्लिष्ट श्। বিশেষ সম্পাদনা | রবীন্দ্র-রচনার পাঠনির্ণয়ে যেসকল ক্ষেত্রে পূর্বেই জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে অনুমানের আশ্রয় লওয়া হইয়াছিল অথবা এখনো অনুমান ভিন্ন গতি নাই (বই বাঁধাইতে গিয়া কবির হাতের লেখা বেশ কিছু হাঁটাই হইয়াছে) বিশেষ বন্ধনী-মধ্যে-[ ]-সেই-সব আনুমানিক পাঠ দেওয়া হইয়াছে। টীকা-টিপ্পানীবোধক কয়েকটি বিশেষ অঙ্কচিহ্ন বা ক্ৰমিক সংখ্যাদি সম্পাদনার সুবিধার জন্য সংযোজিত। "