পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8tr রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী আমাদের গণেশ সরকারকে ডেকে দে । আীয়া চলে গেল, পেন্সিল নিয়ে নীরজা একখানা চিঠি লিখতে বসল। গণেশ এল। (গণেশকে) চিঠি পৌছিয়ে দিতে পারবে জেলখানায় সরলাদিদিকে ? গণেশ। পারব। কিছু খরচ লাগবে। কিন্তু কী লিখলে মা শুনি, কেননা পুলিশের হাত দিয়ে যাবে চিঠিখানা। k নীরজা। (পত্র পাঠ) ধন্য তোমার মহত্ত্ব! এবার জেলখানা থেকে বেরিয়ে যখন আসবে তখন দেখবে তোমার পথের সঙ্গে আমার পথ মিলে গেছে। গণেশ। ঐ যে পথটার কথা লিখেছ, ভালো শোনাচ্ছে না। আমাদের উকিলবাবুকে দেখিয়ে ঠিক করা যাবে। {গণেশের প্রস্থান ওষুধের পেয়ালা হাতে নিয়ে আদিত্যের প্রবেশ নীরজা। এ আবার কী? আদিত্য। ডাক্তার বলে গেছে ঘণ্টায় ঘণ্টায় ওষুধ খাওয়াতে হবে। নীরজা। ওষুধ খাওয়াবার জন্যে বুঝি আর পাড়ায় লোক জুটল না। নাহয় দিনের বেলাকার জন্যে একজন নার্স রেখে দাও-না, যদি মনে এতই উদবেগ থাকে। আদিত্য। সেবার ছলে কাছে আসবার সুযোগ যদি পাই ছাড়ব কেন ? নীরজা। তার চেয়ে কোনো সুযোগে তোমার বাগানের কাজে যদি যাও তো আমি ঢের বেশি। খুশি হব। আমি পড়ে আছি, আর দিনে দিনে বাগান যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আদিত্য। হোক-না নষ্ট। সেরে ওঠো আগে, তার পর সেদিনকার মতো দুজনে মিলে কাজ করব । a নীরজা। সরলা চলে গেছে, তুমি একলা পড়েছি, কাজে মন যাচ্ছে না। কিন্তু উপায় কী? তাই বলে লোকসান করতে দিয়ে না। আদিত্য। লোকসানের কথা আমি ভাবছি নে নীরু। বাগান করাটা যে আমার ব্যাবসা সে কথা এতদিন তুমিই ভুলিয়ে রেখেছিলে, কাজে তাই সুখ ছিল। এখন মন যায় না। নীরজা। অমান করে আক্ষেপ করছি কেন ? বেশ তো কাজ করছিলে এই সেদিন পর্যন্ত। কিছুদিনের জন্যে যদি বাধা পড়ে তাই নিয়ে এত ব্যাকুল হোয়ো না। আদিত্য। পাখাটা কি চালিয়ে দেব ? নীরজা। বাড়াবাড়ি কোরো না তুমি, এ-সব কাজ তোমাদের নয়। এতে আমাকে আরো ব্যস্ত করে তোলে। যদি কোনােরকম করে দিন কাটাতে চাও তো তোমাদের তো হার্টিকালচরিসট্র ক্লাব আছে। f আদিত্য। তুমি যে রঙিন লিলি ভালোবাস, বাগানে অনেক খুঁজে একটাও পাই নি। এবারে ভালো বৃষ্টি হয় নি বলে গাছগুলোর তেজ নেই। নীরজা। কী তুমি মিছিমিছি বাকছ! তার চেয়ে হলাকে ডেকে দাও, আমি শুয়ে শুয়েই