পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NRG NR রবীন্দ্র-রচনাবলী ডাক্তার নীরজার নাড়ী দেখে চুপ করে রইল। কিছুক্ষণ পরে রোগী চোখ মেলেই বললেনীরজা। ডাক্তার, আমাকে বাঁচাতেই হবে। সরলাকে না দেখে যেতে পারব না, ভালো হবে না তাতে। আশীৰ্বাদ করব তাকে । শেষ আশীৰ্বাদ। আবার এল চোখ বুজে, হাতের মুঠো শক্ত হল, বলে উঠল- “ ঠাকুরপো, কথা রাখব, কৃপণের মতো মরব না। এক-একবার চেতনা ক্ষীণ হয়ে জগৎ ঝাপসা হয়ে আসছে, আবার নিবু-নিবু প্ৰদীপের মতো জীবন-শিখা উঠিছে জ্বলে। স্বামীকে থেকে থেকে জিজ্ঞাসা করছে— কখন আসবে সরলা ? (থেকে থেকে ডেকে ওঠে) রোশনি। রোশনি। কী খোখী ? নীরজা। ঠাকুরপোকে ডেকে দে এক্ষুনি। (এক-একবার আপনি বলে ওঠে—) কী হবে। আমার, ঠাকুরপো! দেব দেব দেব, সব দেব। ভৃত্য। (আদিত্যের কানে কানে) সরলা দিদিমণি এসেছেন। আদিত্যের প্রস্থান ও সরলাকে নিয়ে প্রবেশ নীরজার কানের কাছে মাথা নামিয়ে আদিত্য। সরলা এসেছে। নীরজা। (চোখ ঈষৎ মেলে আদিত্যকে) তুমি যাও। আদিত্য ও ভাজারের প্রস্থান। নীরজা একবার ডেকে উঠল-- ঠাকুরপো। नद मिटक সরলা এসে প্ৰণাম করবার জন্য পায়ে হাত দিতেই যেন বিদ্যুতের আঘাতে ওর সমন্ড শরীর আক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। পা দ্রুত আপনি গেল সরে। ভাঙা গলায়-- পারলুম না, পারলুম না, দিতে পারব না, পারব না। বলতে বলতে অস্বাভাবিক ক্তোর এল দেহে, চোখের তারা প্রসারিত হয়ে জুলতে লাগল। চেপে ধরলে সরলার হাত, তীক্ষ্ণ কণ্ঠে জায়গা হবে না তোর রাক্ষসী, জায়গা হবে না। আমি থাকিব, থাকিব, থাকব। হঠাৎ ঢ়িলে সেমিজ-পরা পাংশুবৰ্ণ শীর্ণ মূর্তি বিছানা ছেড়ে খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে উঠল। অন্তত গলায়পালা, পালা, পালা এখনি, নইলে দিনে দিনে শেল বিধব তোর বুকে-- শুকিয়ে ফেলব। তোর রক্ত । বলেই পড়ে গেল মেঝের উপর। ছুটে আদিত্যের ঘরে প্রবেশ