পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

जिन्कों vØSA আমাদের ছাত্ররা সকলে মিলে ঠেলে উদ্ধার করে দিলে। সেদিন কোনো অভ্যাগত আশ্রমে যখন উপস্থিত হলেন তঁর মোট বয়ে আনবার কুলি ছিল না ; আমাদের কোনো তরুণ ছাত্র অসংকোচে তার বোঝা পিঠে করে নিয়ে যথাস্থানে এনে পৌঁছিয়ে দিয়েছিল। অপরিচিত অতিথিমাত্রের সেবা ও আনুকূল্য তারা কর্তব্য বলে জ্ঞান করত। সেদিন তারা আশ্রমের পথ নির্মাণ করেছে, গর্ত করে তাদের শিক্ষার মধ্যে সংস্কৃতি প্রবেশ করেছিল। সেই-সব ছেলেদের প্রত্যেককে তখন আমি জানতেমা ; তার পরে অনেক দিন তাদের অনেককে দেখি নি। আশা করি তারা নিন্দবিলাসী নয়, পরশ্ৰীকাতর নয়, অক্ষমাকে সাহায্য করতে তারা তৎপর এবং ভালোকে তারা ঠিকমতো যাচাই করতে জানে। ১৫ জুলাই ১৯৩৫ শ্রাবণ ১৩৪২ অকিঞ্চিৎকরত। এই অকিঞ্চিৎকরতের মূলে আছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার অস্বাভাবিকতা, দেশের মাটির সঙ্গে এই ব্যবস্থার বিচ্ছেদ। চিত্তবিকাশের যে আয়োজনটা স্বভাবতই সকলের চেয়ে আপন হওয়া উচিত ছিল সেইটেই রয়েছে সব চেয়ে পর হয়ে- তার সঙ্গে আমাদের দড়ির যোগ হয়েছে, নাড়ীর যোগ হয় নি ; এর ব্যর্থতা আমাদের স্বজাতিক ইতিহাসের শিকড়কে জীৰ্ণ করছে, অনাস্ত্রীয়তার দুঃসহ ভার অগত্যাই চেপে রয়েছে ; আইন আদালত, সকলপ্রকার সরকারি কাৰ্যবিধি, যা বহুকোটি ভারতবাসীর ভাগা চালনা করে, তা সেই বহুকোটি ভারতবাসীর পক্ষে সম্পূর্ণ দুর্বোধি, দুৰ্গম। আমাদের ভাষা, আমাদের আর্থিক অবস্থা, আমাদের অনিবাৰ্য অশিক্ষার সঙ্গে রাষ্ট্রশাসনবিধির বিপুল ব্যবধান-বসন্ত পদে পদে যে দুঃখ ও অপব্যয় ঘটে তার পরিমাণ প্রভৃত। তবু বলতে পারি। “এহ বাহ্য’। কিন্তু শিক্ষাৰ্যাপার দেশের প্রাণগত আপন জিনিস না হওয়া তার চেয়ে মর্মস্তিক। ল্যাবরেটরিতে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবিত কৃত্রিম অন্নে দেশের পেট ভরাবার মতো সেই চেষ্টা ; অতি অল্পসংখ্যক পেটেই সেটা পৌঁছয়, এবং সেটাকে সম্পূর্ণ রক্তে দূরত্ব এবং সেই শিক্ষার অপমানজনক স্বল্পতা দীর্ঘকাল আমাকে বেদনা দিয়েছে ; কেননা নিশ্চিত জানি সকল পরাশ্রয়তার চেয়ে ভয়াবহ শিক্ষায় পরধর্ম। এ সম্বন্ধে বরাবর আমি আলোচনা আমার এই প্রসঙ্গে পুনরুক্তি অনেকেই হয়তো ধরতে পারবেন না ; কেননা অনেকেরই কানে আমার সেই পুরোনো কথা পৌছয় নি। যাঁদের কাছে পুনরুক্তি ধরা পড়বে তারা যেন ক্ষমা করেন। কেননা আজ আমি দুঃখের কথা বলতে এসেছি, নূতন কথা বলতে আসি নি। আমাদের দেশে ম্যালেরিয়া যেমন নিত্যই আপনার পুনরাবৃত্তি করতে থাকে, আমাদের দেশের সকল সাংঘাতিক দুঃখগুলির সেই দশা। ম্যালেরিয়া অপ্রতিহার্য নয় এ কথায় যাদের নিশ্চিত বিশ্বাস তাদেরই অজেয় ইচ্ছা ও প্রবল অধ্যবসায়ের কাছে ম্যালেরিয়া দৈববিহিত দুৰ্যোগের ছদ্মবেশ ঘুচিয়ে দিয়ে বিদায় S &በቅ S