পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

यात्ला भाजस्ठद्ध “পত্র’ শব্দযোগে বাংলায় কতকগুলি শব্দ বহুত্ব অর্থ গ্রহণ করে। কিন্তু সেই বিশেষ কয়েকটি শব্দ ছাড়া অন্য শব্দের সহিত উহার ব্যবহার চলে না। গহনাপত্র, তৈজসপত্র, আসবাবপত্র, জিনিসপত্র, বিছানাপত্র, ঔষধপত্র, খরচপত্র, দেনাপত্র, চিঠিপত্র, খাতপত্র, চোতাপত্র, হিসাবপত্র, নিকাশপত্র, দলিলপত্র, পুঁথিপত্র, বিষয়পত্র। । ঝুড়ি ঝুড়ি, মুঠামুঠ, বাক্সবক্স, কলসিকলসি, বাটবাট। এগুলি কেবলমাত্র আধারবাচক শব্দ সম্বন্ধেই থাটে ; মাপ বা ওজন সম্বন্ধে খাটে না— গজ-গজ বা সের-সের বলা চলে না। সময় সম্বন্ধেও বহুত্ব অর্থে শব্দদ্বৈত ঘটে-বার বার, দিন দিন, মাস মাস, ঘড়ি ঘড়ি। বহুত্ব বুঝাইবার জন্য সমার্থক দুই শব্দের যুগত ব্যবহৃত হয়, যেমন ; লোকজন, কাজকর্ম, ছেলে।পুলে, পাখিপাখালী জন্তজানােয়ার, কাঙালগরিব, রাজারাজড়া, বাজনাবাদ্য। এই সকল যুগ শব্দের দুই অংশের এক অর্থনহে। কিন্তু কাছাকাছি অর্থ এমন দৃষ্টান্তও আছে; দোকানহাট, শাকসবজি, বনজঙ্গল, মুটেমজুর, হাঁড়িকুঁড়ি। এরূপ স্থলে বহুত্বের সঙ্গে কতকটা বৈচিত্র্য বুঝায়। যুগ শব্দের একাংশের কোনো অর্থ নাই এমনও আছে। যেমন, কাপড়চােপড়, বাসনকোসন, চাকরিবাকির। এ স্থলেও কতকটা বৈচিত্র্য অর্থ দেখা যায়। কথিত বাংলায় "ট" অক্ষরের সাহায্যে একপ্রকার বিকৃত শব্দ দ্বৈত আছে। যেমন, জিনিসটিনিস, ঘোড়াটােড়া। ইহাতে প্রভৃতি শব্দের ভাবটা বুঝায়। কার্তিক ১৩১৮ স্ত্রীলিঙ্গ ভারতবর্ষের অন্যান্য গৌড়ীয় ভাষায় শব্দগুলি অনেক স্থলে বিনা কারণেই স্ত্রী ও পুরুষ শ্রেণীতে বিভক্ত হইয়াছে। হিন্দিতে ভেঁা (ভ্র), মৃত্যু, আগ (অগ্নি), ধূপ শব্দগুলি স্ত্রীলিঙ্গ। সোনা, রুপা, হীরা, প্রেম, লোভ পুংলিঙ্গ। বাংলা শব্দে এরূপ অকারণ, কাল্পনিক, বা উচ্চারণমূলক স্ত্রী পুরুষ ভেদ নাই। এমন-কি, অনেক সময় স্বাভাবিক স্ত্রীবাচক শব্দও স্ত্রীলিঙ্গসূচক কোনো প্রত্যয় গ্রহণ করে না। সেরূপ স্থলে বিশেষভাবে শ্ৰীজাতীয়ত্ব বুঝাইতে হইলে বিশেষণের প্রয়োজন হয়। কুকুর, বিড়াল, উট, মহিষ, প্রভৃতি শব্দগুলি সংস্কৃত শব্দের নিয়মে ব্যবহারকালে লিখিত ভাষায় কুকুরী, বিড়ালী, উত্নী, মহিষী হইয়া থাকে। কিন্তু কথিত ভাষায় এরূপ ব্যবহার হাস্যকর। সাধারণত ই এবং ঈ প্রত্যয় ও নি এবং নীি প্রত্যয় যোগে বাংলায় স্ত্রীলিঙ্গপদ নিম্পন্ন হয়। ই ও ঈ প্রত্যয় ; ষ্ট্ৰেীড়া ষ্টুড়ি, ছোকরা দুকরি, খুড়া খুড়ি, কাকা কাকি, মামা মমি, পাগলা পাগলি, ঘোড়া ঘুড়ি, বুড়া বুড়ি, বামন বামনি, খোকা খুকি, শ্যােলা শ্যালি, অভাগা অভাগী, হতভাগা নি ও নী। প্রত্যয় : কলু কলুনি, তেলি তেলিনি, গয়লা গয়ালানি, বাঘ বাঘিনি, মালি মালিনী, ধোবা ধোবানি, নাপিত নপতানি (নাপতিনি), কামার কামারনি, চামার চামারনি, পুরুত পুরুতনি, মেথর মেথরানি, তঁতি তীতিনি, মজুর মজুরনি, ঠাকুর ঠাকুরানি (ঠাকরুন), চাকর চাকরানি, হাড়ি