পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब९ठी कामठ्सू 8Y & ক্রিয়াপদের যোগ। সেইরকম ভঙ্গি করে প্রণাম করাই গড় করে প্রণাম করা। নমস্কার হই বলি নে, নমস্কার করি বলি-গড় করি সেই পর্যায়ের শব্দ। গড়াই গড়াগড়ি দিই শব্দে বুঝতে হবে শরীরকে একটা বিশেষ অবস্থাপন্ন করি, এর সংসর্গে হই’ ক্রিয়াপদ আসতেই পারে না। श्। * ". tu জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৭ অভিভাষণ একদিন ছিল যখন পণ্ডিত্যের সঙ্গে বাংলা ভাযা ও বাংলা সাহিত্যের বিরোধ ছিল। এর প্রতি কিছু অবজ্ঞাও তখন করা হয়েছে। প্রাচীন সংস্কৃতের আলয় থেকে বাংলা তখন যথোচিত সম্মান পায় নি তার কারণও হয়তো ছিল। তখন বাংলা ছিল অপরিণত, সাহিত্যের অনুপযোগী। এর দৈন্যকে উপেক্ষা করা সহজ ছিল। কিন্তু যে শক্তি তখন এর মধ্যে প্রচ্ছন্ন ছিল, সে শক্তি এ কোথা থেকে পেয়েছে ? সংস্কৃত ভাষারই অমৃত উৎস থেকে। সেই কারণেই তার পরিণতিও চলেছে, কোথাও বাধা পায় নি। বাইরে থেকে যে-সকল বিদ্যা আমরা লাভ করেছি, তা আমাদের ভাষায় রক্ষা কর সম্ভব হল, কারণ বাংলার দৈন্য ও অভাব আজ আর বেশি নেই। পারিভাষিকের কিছু দারিদ্র্য আছে বটে, কিন্তু সে দরিদ্র্য পূৰ্ণ করবার উপায় আছে সংস্কৃতের মধ্যে। একদিন ছিল ভারতবর্ষে ভাষা-বোধের একটা প্রতিভা। ভারতবর্ষ পাণিনির জন্মভূমি। তখনকার দিনে প্রাকৃতিকে যারা বিধিবদ্ধ করেছিলেন, তঁরা ছিলেন পরম পণ্ডিত। অথচ প্রাকৃতের প্রতি তাদের অবজ্ঞা ছিল না। সংস্কৃত ব্যাকরণের চাপে তঁরা প্ৰকৃতকে লুপ্তপ্রায় করেন নি। তার কারণ ভাষা সম্বন্ধে তাদের ছিল সহজ বোধশক্তি। আমরা আজকাল সংস্কৃত শিখে ভুলে যাই যে বাংলার একটি স্বকীয়তা আছে। অবশ্য সংস্কৃত থেকেই সে শব্দ-সম্পদ পাবে, কিন্তু তার নিজের দৈহিক প্রকৃতি সংস্কৃত দ্বারা আচ্ছন্ন করবার চেষ্টা অসংগত। আমাদের প্রাচীন পণ্ডিতেরা কখনো সে চেষ্টা করেন নি। আমি সেকালের পণ্ডিতদের বাংলায় লেখা অনেক পুরানো পুথি দেখেছি। ৩ার বানান তঁরা বাংলা ভাষাকে প্রাকৃত জেনেই করেছিলেন। তঁদের যত্ন ণত্ব জ্ঞান ছিল না, এ কথা বলা চলে না। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের আমলেও এখনকার নব পণ্ডিতদের মতো। ষত্ব ণত্ব নিয়ে শ৩িমিতি করা হয় নি। তা করলে “শ্রবণ” থেকে উদ্ভূত “শোনা” কখনোই মূর্ধন্য ণ-এর অত্যাচার ঠৈকাতে পারত না। যাঁরা মনে করেছেন বাইরে থেকে বাংলাকে সংস্কৃতের অনুগামী করে শুদ্ধিদান করবেন, তারা সেই দোষ করছেন যা ভারতে ছিল না। এ দোষ পশ্চিমের। ইংরেজিতে শব্দ ধ্বনির অনুযায়ী নয়। ল্যাটিন ও গ্ৰীক থেকে উদ্ভূত শব্দে বানানের সঙ্গে ধ্বনির বিরোধ হলেও তীরা মূল বানান রক্ষা করেন। এই প্রণালীতে তারা ইতিহাসের স্মৃতি বেঁধে রাখতে চান। কিন্তু ইতিহাসকে রক্ষণ করা যদি অবশ্যকর্তব্য হয় তবে ডারউইন-কথিত আমাদের পূর্বপুরুষদের যে অঙ্গটি খসে গৈছে সেটিকে আবার সংযোজিত করা উচিত হবে। প্রসঙ্গক্রমে আধুনিক পণ্ডিতদের একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করি, তাদের মতে, “বানান' শব্দে কোন ন লাগবে ? : ; ১ গিরিজাকুমার বসুকে লিখিত পত্র এই পত্রের উপরে ডান দিকে লেখা আছে ‘গজীকরণ নমস্করণ’ ‘নতীকরণ”।