পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা শব্দতত্ত্ব । 8 WS १ळीं दक्ष : ३ বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃক বাংলা বানানের যে নিয়ম প্রবর্তিত হয়েছে তার একটা অংশ সম্বন্ধে আমার কিছু বলবার আছে- এইখানে সেটা উত্থাপিত করি। যথোচিত আলোচনা দ্বারা তার চরম মীমাংসা প্রার্থনীয়। হ-ধাতু খা-ধাতু দি-ধাতু ও শু-ধাতুর অনুজ্ঞায় তঁরা নিম্নলিখিত ধাতুরূপের নির্দেশ করেছেন— श्g, झशा। शों9, (२७ । नle, निg । (भाg, g:ा। দেখা যাচ্ছে, কেবলমাত্র আকারযুক্ত খা- এবং ইকারযুক্ত দি- ধাতুতে ভবিষ্যৎবাচক অনুজ্ঞায় ঠারা প্রচলিত খেয়ো এবং দিয়ো বানানের পরিবর্তে খেও এবং দিও বানান আদেশ করেছেন। অথচ হয়ে এবং শুয়ো-র বেলায় তাদের অন্যমত । একদা হয় খায় প্রভৃতি ক্রিয়াপদের বানান ছিল হএ, খাএ। করে” চলে যে নিয়মে একারান্ত সেই নিয়মে হয় খায়ও একারান্ত হবার কথা— পূর্বে তাই ছিল। তখন খা, গা, চা, দি, ধা প্রভৃতি একাক্ষরের ধাতুপদের পরে য়-র প্রচলন ছিল না। তদনুসারে ভবিষ্যৎবাচক অনুজ্ঞায় য়-বিযুক্ত ‘ও’ ব্যবহৃত হত । , এ নিয়মের পরিবর্তন হবার উচ্চারণগত কারণ আছে। বাংলায় স্বরবর্ণের উচ্চারণ সাধারণত হস্থ, যথা খাএ, খাও ! কিন্তু অসমাপিকায় যখন বলি খেএ (খেয়ে) বা ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞায় যখন বলি খেও (খেয়াে) তখন এই স্বরবর্ণের উচ্চারণ কিঞ্চিৎ দীর্ঘ হয়। খাও এবং খেও শব্দে ওকারের উচ্চারণে প্রভেদ আছে। সন্দেহ নেই। এ-সকল স্থলে শব্দের অন্তস্বর আপনি দীর্ঘত্ব রক্ষার জন্য য়-কে আশ্রয় করে। একদা করিয়া খাইয়া শব্দের বানান ছিল, করি আ, খাইআ । কিন্তু পূর্ব স্বরের অনুবতী দীর্ঘ স্বর য়-যোজকের অপেক্ষা রাখে। তাই স্বভাবতই আধুনিক বানান উচ্চারণের অনুসরণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শুয়াে হয়ে শব্দে এ কথা স্বীকার করেছেন, অন্যত্র করেন নি। আমার বিশ্বাস এ আমরা যাকে সাধু ভাষা বলে থাকি বিশ্ববিদ্যালয় বোধ করি তার প্রচলিত বানানের রীতিতে অত্যন্ত বেশি হস্তক্ষেপ করতে ইচ্ছক নন। নতুবা খাইয়া যাইয়া প্রভৃতি শব্দেও তারা প্রাচীন বিধি অনুসারে পরিবর্তন আদেশ করতেন। আমার বক্তব্য এই যে, যে-কারণে সাধুভাষায় করিয়া হইয়া বলিয়াে খাইয়াে চাহিয়াে বানান স্বীকৃত হয়েছে সেই কারণ চলিত ভাষাতেও আছে। দিয়েছে শব্দে তঁরা যদি ‘এ’ স্বরের বাহিনীরূপে য়-কে স্বীকার করেন তবে দিয়ে শব্দে কোন য়-কে উপেক্ষা করবেন? কেবলমাত্র দি- এবং খা- ধাতুর য় অপহরণ আমার মতে তাদের প্রতি অবিচার করা। কীর্তিক ১৩৪৩ <९० : ७ ধ্বনিসংগত বানান এক আছে সংস্কৃত ভাষায় এবং প্রাচীন প্রাকৃত ভাষায়। আর কোনো ভাষায় আছে কিংবা ছিল কি না জানি নে। ইংরেজি ভাষায় যে নেই। অনেক দুঃখে তার আমরা পরিচয় পেয়েছি। আজও তার এলেকায় ক্ষণে ক্ষণে কলম হাঁচটি খেয়ে থমকে যায়। বাংলা ভাষা শব্দ সংগ্রহ করে সংস্কৃত ভাণ্ডার থেকে, কিন্তু ধ্বনিটা তার স্বকীয়। ধ্বনিবিকারেই অপভ্রংশের উৎপত্তি।