পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8x€ዕbr ख़दीक्ष-लbभावकी রেফাহীন অপভ্ৰংশ সোনায় তঁরা মূর্ধন্য ণ আঁকড়িয়ে আছেন, অথচ শ্রবণের অপভ্রংশ শোনা তাদের মূর্ধন্যপক্ষপাতি তীক্ষ দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। ব্যাকরণের তর্ক থাক, ওটাতে চিরদিন আমার দুর্বল অধিকার। কৃষ্ণ শব্দের অপভ্রংশে কোনো প্রাকৃতে কাণহ বা কাণ থাকতেও পারে, যদি থাকে সেখানে সেটা উচ্চারণের অনুগত। সেখানে কেবল লেখবার বেলা কাণহ এবং বলবার বেলা কানহ কখনােই আদিষ্ট হয় নি। কিন্তু প্ৰাকৃত বাংলায় তো মূর্ধন্য ণয়ের সাড়া নেই কোথাও। মুদ্রাযন্ত্রকে দিয়ে সবই ছাপানো যায়। কিন্তু রসনাকে দিয়ে তো সবই বালানো যায় না। কিন্তু যে মূর্ধন্য ণয়ের উচ্চারণ প্রাকৃত বাংলায় একেবারেই নেই, গায়ে পড়ে তার আনুগত্য স্বীকার করতে যাব কেন ? এই পাণ্ডিত্যের অভিমানে শিশুপালদের প্রতি যে অত্যাচার করা যায় সেটা মার্জনীয় নয়। প্রাকৃত বাংলায় মূর্ধন্য ণয়ের স্থান কোনোখানেই নেই এমন কথা যে-সাহসে কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করতে পেরেছেন সেই সাহস এখনো আরো কতক দূর তাদের ব্যবহার করতে হবে। এখনো শেষ আষাঢ় ১৩৪৪ S ...বাংলা বানানের নিয়ম বিধিবদ্ধ করবার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলুম। তার কারণ এই যে, প্রাকৃত বাংলার ব্যবহার সাহিত্যে অবাধে প্রচলিত হয়ে চলেছে। কিন্তু এর বানান সম্বন্ধে স্বেচ্ছাচার ক্রমশই প্রবল হয়ে উঠছে দেখে চিন্তিত হয়েছিলুম। এ সম্বন্ধে আমার আচরণেও উচ্ছঙ্খলতা প্ৰকাশ পায় সে আমি জানি, এবং তার জন্য আমি প্রশ্ৰয় দাবি করি নে। এ রকম অব্যবস্থা দূর করবার একমাত্র উপায় শিক্ষা-বিভাগের প্রধান নিয়ন্তাদের হাতে বানান সম্বন্ধে চরম শাসনের ভর সমর্পণ করা। . . . বাংলা ভাষার উচ্চারণে তৎসম শব্দের মর্যাদা রক্ষা হয় বলে আমি জানি নে। কেবলমাত্র অক্ষর বিন্যাসেই তৎসমতার ভান করা হয় মাত্র, সেটা সহজ কাজ । বাংলা লেখায় অক্ষর বানানের নিজীব বাহন— কিন্তু রসনা নিজীব নয়- অক্ষর যাই লিখুক, রসনা আপন সংস্কারমতোই উচ্চারণ করে চলে। সে দিকে লক্ষ করে দেখলে বলতেই হবে যে, অক্ষরের দোহাই দিয়ে যাদের তৎসম “ খেতাব দিয়ে থাকি, সেই সকল শব্দের প্রায় যোলো আনাই অপভ্রংশ। যদি প্রাচীন ব্যাকরণিকর্তাদের সাহস ও অধিকার আমার থাকত, এই ছদ্মবেশীদের উপাধি লোপ করে দিয়ে সত্য বানানে এদের স্বরূপ প্রকাশ করবার চেষ্টা করতে পারতুম। প্রাকৃত বাংলা ব্যাকরণের কেমাল এমন-কি, যে-সকল অবিসংবাদিত তদভব শব্দ অনেকখানি তৎসম-ঘেঁষা, তাদের প্রতি - ১। আমি “প্রাকৃত বাংলা" শব্দটি ব্যবহার করে আসছি। সেদিন এর একটা পুরাতন, নজির পেয়ে আশ্বস্ত হয়েছি। বুলবুল নামক প্ৰত্রে। যথা—“দেসি ভাসে পদবন্ধে গাহি পরীকৃতে ।” প্রবন্ধটির রবীন্দ্রনাথ-কৃত একটি সংশোধিত প্রফ রবীন্দ্রভবনে রক্ষিত আছে। বর্তমান সংস্করণে ওই সংশোধন অনুযায়ী পাঠ গৃহীত। '