পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংগীতচিন্তা (?x©ሚእ করিয়া দেন, ওস্তাদ সেটা সম্পূর্ণ বজায় রাখেন। তঁকে যে নিতান্ত আড়ষ্ট হইয়া থাকিতে হইবে তাও নয়, আবার খুব যে দাপাদাপি করিবেন। সে রাস্তাও বন্ধ। যুরোপের প্রত্যেক গান একটি বিশেষ ব্যক্তি, সে আপনার মধ্যে প্রধানত আত্মমর্যাদাই প্রকাশ করে। ভারতে প্রত্যেক গান একটি বিশেষ-জাতীয়, সে আপনার মধ্যে প্রধানত জাতিমৰ্যাদাই প্রকাশ করে! যুরোপীয় ওস্তাদকে সাবধানে গানের ব্যক্তিত্ব বজায় রাখিয়া চলিতে হয়। আমাদের দেশের গানে ব্যক্তিত্ব আছে, কেবল সে কোন জাতি তাই সন্তোষজনক রূপে প্রমাণ করিবার জন্যে। যুরোপে গান সম্বন্ধে যে কর্তৃত্ব গান-রচয়িতার, আমাদের দেশে তােহাঁই দুইজনে বাখরা করিয়া লইয়াছে— গানওয়ালা এবং গাহনেওয়ালা। যেখানে কর্তৃত্বের এমন জুড়ি হাঁকানো হয় সেখানে রাস্তাটা চওড়া চাই। গানের সেই চওডা রাস্তার নাম রাগরাগিণী । সেটা গানকর্তার প্রাইভেট রাস্তা নয়, সেখানে ট্রেসপ্যাসের আইন খাটে না। এক হিসাবে এ বিধিটা ভালোই। যে মানুষ গান বাঁধিবে আর যে মানুষ গান গাহিৰে দুজনেই যদি সৃষ্টিকর্তা হয় তবে তো রসের গঙ্গাযমুনাসংগম। যে গান গাওয়া হইতেছে সেটা যে কেবল আধুপ্তি নয়, তাতা যে তখন-তখনি জীবন-উৎস হইতে তাজা উঠিতেছে, এটা অনুভব করিলে শ্রা তার আনন্দ অক্লান্ত অম্লান হইয়া থাকে। কিন্তু মুশকিল। এই যে, সৃষ্টি করিবার ক্ষমতা জগতে OkuBDS DDDD BDLDD LHSSD kDBD KBB BBLS BBB BBBB BBD DBDBBBDD JBB DDB DBDS uBBBBBD এরা দুই জাতের মানুষ। দৈবাৎ ইহাদের জোড় মেলে, কিন্তু প্ৰায় মেলে না। ফলে দাঁড়ায় এই যে, কলাকৌশলের কলা অংশটা থাকে গানকর্তার ভাগে, আর ওস্তাদের ভাগে পড়ে কৌশল অংশটা ৷ কৌশল জিনিসটা খাদ হিসাবেই চলে, সোনা হিসাবে নয়। কিন্তু ওস্তাদের হাতে খাদের “মশল বাড়িতেই থাকে। কেননা, ওস্তাদ মানুষটাই মাঝারি, এবং মাঝারির প্রভুত্বই জগতে সব চেয়ে বড়ো দুর্ঘটনা। এইজনো ভারতের বৈঠকী সংগীত কালক্রমে সুরসভা ছাড়িয়া অসুরের কৃপ্তির আখড়ায় নামিয়াছে। সেখানে তান-মান-লয়ের তাণ্ডবটাই প্রবল হইয়া ওঠে, আসল গানটা ঝাপসা হইয়া থাকে। রসবোধের নাড়ি যখন ক্ষীণ হইয়া আসে কৌশল তখন কলাকে ছাড়াইয়া যায়, সাহিত্যের ইতিহাসেও ইহা বরাবর দেখা গেছে। এ দেশে গানের যখন ভরাযৌবন ছিল তখন এমন-সব ওস্তাদ নিশ্চয়ই সর্বদাই মিলিত, গান গাওয়াই যাদের স্বভাব, গানের পালোয়ানি করা যাদের পাবিসা নয়। বুলবুলি তখন গানেরই খাতি পাইত, লড়াইয়ের নয়। তখন এমন-সকল শ্রোতাও নিশ্চয়ই ছিল যারা সংগীত-ভাটপাড়ার বিধান যাচাইয়া গানের বিচার করিতেন না। কেননা, শুনিবারও প্রতিভা থাকা চাই, কেবল শুনাইবার নয়। আমাদের কালোয়াতি গানের এই যে রাগরাগিণী, ইহার রসটা কী? রাগ শব্দের গোড়াকার মানে রঙ। এই শব্দটা যখন মনের সম্বন্ধে ব্যবহার করা হয় তখন বোঝায় ভালো লাগা। বাংলায় রাগ কথাটার মানে ক্ৰোধ। ইংরেজিতে passion বলিতে ভালো লাগা আর ক্ৰোধ দুই বোঝায়। ভালো লাগা আর ক্ৰোধ এই দুয়ের মধ্যে একটা ঐক্য আছে। এই দুটাে ভাবেই চিত্ত উদ্দীপ্ত হইয়া উঠে । এই দুয়েরই এক রঙ, সেই রঙটা রাঙা। ওটা রক্তের রঙ, হৃদয়ের নিজের আভা। বিশ্বের একটা হৃদয়ের আভা নিয়ত প্রকাশ পাইতেছে। ভোরবেলাকার আকাশে হাওয়ায় এমন কিছু একটা আছে যেটা কেবলমাত্র বস্তু নয়, ঘটনা নয়, যেটা কেবল রস। এই রসের ক্ষেত্রেই আমাদের অন্তরের সঙ্গে বাহিরের রাগ-অনুরাগের মিল। এই মিলের তত্ত্বটি অনির্বাচনীয়। ধাহা নির্বচনীয় তাহা পৃথক, তাহা আপনাতে আপনি সুনির্দিষ্ট। যেখানে পদ্মফুলের নির্বাচনীয়তা s