পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(28や রবীন্দ্র-রচনাবলী তোমার আঁখি-’পরে ভরভর। যে কথা ছিল তব মনে মনে চমকে অধরের কোণে কোণে । नैीशष्ट्र शिक्षा ऊद ग्रिक्ष उद्भि কী মায়া-স্বপনে যে, মারি মরি, বাদল-নিশীথের ঝরঝর । এ ছন্দে আমার পাঠকেরা কিছু আপত্তি করিলেন না। তাই সাহস কুরিয়া ঐটেই ঐ ছন্দেই সুরে গাহিলাম। তখন দেখি যাঁরা কাব্যের বৈঠকে দিব খুশি ছিলেন তঁরাই গানের বৈঠকে রক্তচক্ষু | তারা বলেন- এ ছন্দের এক অংশে সাত আর-এক অংশে চার, ইহাতে কিছুতেই তাল মেলে না। আমার জবাব এই-- তাল যদি না মেলে সেটা তালেরই দোষ, ছন্দটাতে দোষ হয় নাই। কেন, তাহা বলি। এই ছন্দ তিন এবং চার মাত্রার যোগে তৈরি। এইজন্যই “তোমার নীলবাসে’ এই সাত মাত্রার পর নিল কায়া’ এই চার মাত্রা খাপ খাইল। তিন মাত্রা হইলেও ক্ষতি হইত না, যেমন“তোমার নীলবাসে মিলিল”। কিন্তু ইহার মধ্যে ছয় মাত্রা কিছুতেই সহিবে না। যেমন “তোমারি নীলবাসে ধরিল শরীর’। অথচ প্ৰথম অংশে যদি ছয়ের ভাগ থাকিত তবে দিব্য চলিত, যেমন‘তোমার সুনীল বাসে ধরিল শরীর’। এ আমি বলিতেছি কানোর স্বাভাবিক রুচির কথা। এই কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিবার পথ। অতএব, এই কানের কাছে যদি ছাড় মেলে। তবে ওস্তাদকে কেন ডরাইব ? আমার দৃষ্টান্তগত ছন্দটিতে প্রত্যেক লাইনেই সবসুদ্ধ ১১ মাত্রা আছে। কিন্তু এমন ছন্দ হইতে পারে যার প্রত্যেক লাইনে সমান মাত্ৰা-বিভাগ নাই। যেমন বাজিবে, সখি, বাঁশি বাজিবে। হলদিয়রাজ হলদে রাজিবে। বচন রাশি রাশি কোথা যে যাবে ভাসি, অধরে লাজহোসি সাজিবে। সুখবেদনা মনে বাজিবে। মরমে মুরছিয়া মিলাতে চাবে হিয়া সেই চরণযুগরাজীবে। ইহার প্রথম দুই লাইনে মাত্রােভাগ- ৩ + ৪ + ৩ = ১০ । তৃতীয় লাইনে- ৩ + ৪ + ৩ + ৪ = ১৪। আমার মতে এই বৈচিত্র্যে ছন্দের মিষ্টতা বাড়ে। অতএব উৎসাহ করিয়া গান ধরিলাম। কিন্তু এক ফের ফিরিতেই তালওয়ালা পথ আটক করিয়া বসিল। সে বলিল, “আমার সমের মাশুল চুকাইয়া দাও।” আমি তো বলি এটা বে-আইনি আবোয়াব। কান-মহারাজার উচ্চ আদালতে দরবার করিয়া খালাস পাই। কিন্তু সেই দরবারের বাহিরে খাড়া আছে মাঝারি শাসনতন্ত্রের দারোগা। সে খপ করিয়া হাত চাপিয়া ধরে, নিজের বিশেষ বিধি খাটায়, রাজার দোহাই মানে না। - *