পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

म१ीउल्लुि Qやか○ কথা ও সুর সুরের মহলে কথাকে ভদ্র আসন দিলে তাতে সংগীতের খৰ্ব্বতা ঘটে কি না। এই নিয়ে কথাকাটাকাটি চলছে! বিচারকালে সম্পাদক বলছেন আসামীর বক্তব্য শোনা উচিত ; সংগীতের বড়ো আদালতে আসামী শ্রেণীতে আমার নাম উঠেছে অনেক দিন থেকে ; আত্মপক্ষে আমার যা বলবার সংক্ষেপে বলব ; আমার শক্তি ক্ষীণ, সময় অল্প, বিদ্যাও বেশি নেই! আমি যে শাস্ত্রের দোহাই দিয়ে থাকি সে বিশেষভাবে সংগীতশাস্ত্ৰও নয়, কাব্যশাস্ত্ৰও নয়, তাকে বলে ললিতকলাশাস্ত্ৰসংগীত ও কাব্য দুই তার অন্তর্গত। - কালিদাস রঘুবংশে বলেছেন বাক্য এবং অর্থ একত্রে সম্পূক্ত। কিন্তু যে বাক্য কাব্যের উপাদান, অর্থকে সে অনর্থ করে দিয়ে তবে নিজের কাজ চালাতে পারে। তার প্রধান কারবার অনির্বাচনীয়কে নিয়ে, অর্থের অতীতকে নিয়ে! কথাকে পদে পদে অ্যাড় করে দিয়ে ছন্দের মন্ত্র লাগিয়ে অনির্বাচনীয়ের জাদু লাগানো হয়। কাব্যে, সেই ইন্দ্ৰজালে বাক্য সুরের সমান ধৰ্ম লাভ করে। তখন সে হয় সংগীতেরই সমজাতীয়। এই সংগীতরসিপ্রধান কাব্যকে ইংরেজিতে বলে লিরিক, অর্থাৎ ৩াকে গান গাবার যোগ্য বলে স্বীকার করে। একদা এই-জাতীয় কবিতা সুরেই সম্পূর্ণতা লাভ করা ৩। কবিতার এই সম্মিলিত সম্পূর্ণ রূপ সেদিন গান বলেই গণ্য হত, বৈদিক ক’লে যেমন 2-7 ।। সুরসম্মিলিও কাব্যের যুগলরাপের সঙ্গে সঙ্গেই সুরহীন কাব্যের স্বতন্ত্ররূপ অনেক দিন থেকেই আছে ; অপেক্ষাকৃত পরে যন্ত্রের সাহায্যে গানের স্বাতন্ত্রও এক্রমে উদ্ভাবিত হল। স্বাতন্ত্র্যের মধ্যে এদের যে বিশেষ পরিচয় উন্মুক্ত হয়েছে সেটা মূল্যবান সন্দেহ নেই, কিন্তু তাই তাদের পরস্পরের সঙ্গ ঠেকাবার জন্যে জেনেন-রীতি চালাতেই হবে এমন গোড়ামি মনতে পারব না। শুনেছি চরক-সংহিতায় বলেছে তাকেই বলে ভেষজ যাতে হয় আরোগ্য। যারা চিরকাল একমাত্র অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসায় আসক্ত তাদের মতে তাকেই বলে ভেষজ যা অ্যালোপ্যাথিক মেটিরিয়া মেডিকার ফর্দ-ভুক্ত। বৈদ্যশাস্ত্ৰমতে বড়ি খেয়ে যে লোকটা বলে আরাম পেলুম', তাকে ওরা অশাস্ত্রীয় গ্রাম্য বলেই ধরে নেয়। তারা বলে ডাক্তারি মতেই আরাম হওয়া উচিত,

  • j NZS: KWTS N |

সাংগীতিক চরকা-সংহিতার মতে তাকেই বলে সংগীত যার থেকে গীতরসি পাওয়া যায়। কিন্তু ওস্তাদের সাক্রেন্দরা বলে সেটাই সংগীত যেটা গাওয়া হয় হিন্দুস্থানী কায়দায়। ঐ কায়দার বাইরে যে গীতকলা পা ফেলে তাকে ওরা বলে স্বৈরিণী, সাধুসমাজের সে বার। সমজদারের খাতায় ধারা নাম রাখতে চায়, অন্যশ্রেণীর গানে রস পাওয়াই তাদের পক্ষে ভদ্ররীতিবিরুদ্ধ। কিন্তু আমরা চরকা-সংহিতার সঙ্গে মিলিয়ে বলব— গানের রস যেখানে পাই সেখানেই সংগীত, কথার সঙ্গে তাঁর বিশেষ মৈত্রী থাক বা না থাক। ভালো কারিগরের হাতে শিল্পীত প্ৰদীপের মুখে শিখা জ্বলে উঠে উৎসর্বসভা আলোকিত করল। সেই শিখার আলোককে আলোই বলব, সেইসঙ্গেই গুণীর হাতে গড়া প্ৰদীপটাকেও বাহবা দিলে দোষের হয় না। বস্তুত প্ৰদীপটা আলোককেই সম্মান দিয়েছে, আর ঐ প্রদীপেরও মুখ উজ্জ্বল করেছে আলোক। যাঁরা এ রকম সম্মানের ভাগাভাগিকে সংগীতের জাতিনাশ বলে রাগ করেন তঁরা জ্বালুন-না মশাল- তার বাহনটা নগণ্য হােক, তবু ৩ার আলোর গৌরব মানতে দ্বিধা করব না। : , ‘কারি কারি কমরিয়া গুরুজি মোকো মোল দে’-