সংগীতচিন্তা 6 ዓ እ মনে ধাঁধা লাগে ; কেউ বলে সুর ভালো, কেউ বলে কথা ভালো, সুরের সঙ্গে কথা, কবি কি না। কবির তৈরি গান, এতে ওস্তাদি নেই। ভারতীয় সংগীত বলে যে-একটা প্ৰকাণ্ড ব্যাপার আছে, আমার জন্মের পর তার --নাকি ক্ষতি হয়েছে- অপমান নাকি হয়েছে। তার কারণ আমার অক্ষমতা। বাল্যকালে আমি গান শিখি নি- এত সহজে শেখা যায় না, শিখতে কষ্ট হয়, সেই কষ্ট আমি নেই নি। সেজদাদা শিখতেন বটে— তিনি সুর ভাঁজছেন তো ভঁজছেনই, গলা সাধছেন তো সাধছেনই, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। হয়তো বর্ষাকাল- মেঘলা হয়েছে- আমার তখন একটু কবিতু [[জাগল]। তবু যা শুনতাম হয়তো মনে থাকত। r {এইখানে রবীন্দ্রনাথ একটি গান করেন; খুব মনে পড়ে এই গান যেদিন শিখি। বড়দাদা। সেজদাদারা দরজা বন্ধ করে গান শিখতেন। ছেলেমানুষ, আমার তথায় প্রবেশ ছিল না। কারণ, তখনকার দিনে ছেলেমানুষের অনেক অপরাধ ছিল। তানপুরোর কানি কখনো মুড়ি নি। তবু দরজার পাশে কান দিয়ে শুনেছি, সেটা হয়তো মনে রয়ে গেল। এমনি করে ছুঁয়ে টুয়ে যা শিখেছি তাই তোমাদের কাছে আওড়ালাম ! তোমাদের যা দিয়েছি, এই দুয়ে দুয়ে যা শিখেছি তাই দিয়েছি। আমার গান যাতে আমার গান বলে মনে হয়। এইটি তোমরা কোরো। আরো হাজারো গান হয়তো আছে- তাদের মাটি করে দাও-না, আমার দুঃখ নেই। কিন্তু তোমাদের কাছে আমার মিনতি— তোমাদের গান যেন আমার গানের কাছাকাছি হয়, যেন শুনে আমিও আমার গান বলে চিনতে পারি। এখন এমন হয় যে, আমার গান শুনে নিজের গান কি না বুঝতে পারি না! মনে হয় কথাটা যেন আমার, সুরাটা যেন নয়। নিজে রচনা করলুম, পরের মুখে নষ্ট হচ্ছে, এ যেন অসহা! মেয়েকে অপাত্রে দিলে যেমন সবা-কিছু সইতে হয়, এও যেন আমার পক্ষে সেই রকম।
- বুলবাবু, তোমার কাছে সানুনয় অনুরোধ— এদের একটু দরদ দিয়ে, একটু রস দিয়ে গান শিখিয়াে- এইটেই আমার গানের বিশেষত্ব। তার উপরে তোমরা যদি স্টিম রোলার চালিয়ে দাও, আমার গান চেপ্টা হয়ে যাবে। আমার গানে যাতে একটু রস থাকে, তান থাকে, দরদ থাকে ও মীড় থাকে, তার চেষ্টা তুমি কোরো।
আলাপ-আলোচনা | ২৯ মার্চ ১৯২৫ ...কবিবর হেসে বললেন, “তোমার সংগীত সম্বন্ধে লেখা আজ বিজলীতে পড়ছিলাম।” আমি জিজ্ঞাসুনয়নে তীর দিকে চাইলাম। কারণ, আমি তাকে একটি চিঠিতে কিছুদিন আগে লিখেছিলাম যে, সম্ভবত হিন্দুস্থানী গান সম্বন্ধে তীর সঙ্গে আমার কোনাে মতভেদ নেই যেটা পাংলা গান সম্বন্ধে আছে। । ۔۔۔۔۔ "thum- ܫܒܚܚ
