পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(?Fbr রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী আছে। প্রথমত নিরালা, দ্বিতীয়তা অন্য কোনো কর্তব্যের কোনো দাবি থাকে না- মাথায় একটিন জল ঢেলে পাঁচ মিনিট গুন গুন করলে কর্তব্যজ্ঞানে বিশেষ আঘাত লাগে না- সব চেয়ে সুবিধা হচ্ছে কোনো দর্শকসম্ভাবনা-মাত্র না থাকাতে সমস্ত মন খুলে মুখভঙ্গি করা যায়। মুখভঙ্গি না করলে গান তৈরি করবার পুরো অবস্থা কিছুতেই আসে না। ওটা কিনা ঠিক যুক্তিতর্কের কাজ নয়, নিছক ক্ষিপ্তভাব। এ গানটা আমি এখনো সর্বদা গেয়ে থাকি- আজ প্ৰাতঃকালেও অনেকক্ষণ গুনগুন করেছি, গাইতে গাইতে গভীর একটা ভাবোম্মদও জন্মায়। অতএব এটা যে আমার একটা প্রিয় গান সে বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। কলকাতা : ২১ জুলাই ১৮৯৪ সেদিন অভি] যখন গান করছিল। আমি ভাবছিলাম মানুষের সুখের উপকরণগুলি যে খুব দুর্লভ তা নয়, পৃথিবীতে মিষ্টি গলার গান নিতান্ত অসম্ভব আইডিয়ালের মধ্যে নয়, অথচ ওতে যে আনন্দ পাওয়া যায় তা অত্যন্ত গভীর। কিন্তু জিনিসটি যতই সুলভ হোক, ওর জনো যথোপযুক্ত অবকাশ করে নেওয়া ভারি শক্ত। যে ইচ্ছাপূর্বক গান গবে এবং যে ইচ্ছাপূর্বক গান শুনবে পৃথিবীতে কেবল এই দুটি মাত্র লোক নেই, চতুর্দিকে অধিকাংশ লোক আছে যারা গান গাবেও না গান শুনবেও না। তাই সব-সুদ্ধ মিশিয়ে ও আর হয়েই ওঠে না। sिठ्छट्र ' ': o ट्** S४ 8 আমার মনে হয় দিনের জগৎটা যুরোপীয় সংগীত, সুর-বেসুরে খণ্ডে অংশে মিলে একটা গতিশীল প্ৰকাণ্ড হামানির জন্টলা— আর, রাত্রের জগৎটা আমাদের ভারতবর্মীয় সংগীত, একটি বিশুদ্ধ করুণ গম্ভীর অমিশ্র রাগিণী। দুটোই আমাদের বিচলিত করে, অথচ দুটোই পরস্পরবিরোধী । আমাদের নির্জন এককের গান, য়ুরোপের সজন লোকালয়ের গান। আমাদের গানে শ্রোতাকে মনুষ্যের প্রতিদিনের সুখদুঃখের সীমা থেকে বের করে নিয়ে নিখিলের মূলে যে-একটি সঙ্গীহীন বৈরাগ্যের দেশ আছে সেইখানে নিয়ে যায়, আর যুরোপের সংগীত মনুষের সুখ-দুঃখের অনন্ত উত্থানপতনের মধ্যে বিচিত্রভাবে নৃত্যু করিয়ে নিয়ে চলে। ਅਸਨ , ਸਨ , রামকেলি প্রভৃতি সকাল বেলােকর যে-সমস্ত সুর কলকাতায় নিতান্ত অভ্যস্ত এবং প্রাণহীন বোধ হয়, এখানে তার একটু আভাসমাত্র দিলেই আমনি ৩ার সমস্তটা সঞ্জীব হয়ে ওঠে । ৩ার মধ্যে এমন একটা অপূর্ব সত্য এবং নবীন সৌন্দর্য দেখা দেয়, এমন একটা বিশ্বব্যাপী গভীর করুণ! বিগলিত হয়ে চারি দিককে বাষ্পাকুল করে তোলে ধে, এই রাগিণীকে সমাপ্ত আকাশ এবং সমস্ত পৃথিবীর গান বলে মনে হতে থাকে। এ একটা ইন্দ্ৰ জাল, একটা মায়ামgেণর ম.ে৩। আমার পুরের সঙ্গে কত টুকরো টুকরো কথা যে আমি জুড়ি ৩ার আর সংখ্যা নাই--- এমন এক লাইনের গান সমস্ত দিন কত জমছে এবং কত বিসর্জন দিচ্ছি { রীতিমতো বসে সেগুলোকে পুরো গানে ধাঁধতে ইচ্ছা করছে না।... আজ সমস্ত সকাল নিতান্ত সাদাসিধা ভৈরবী রাগিণীতে যে গোটা দুই-তিন ছাত্র ক্ৰমাগত আবৃত্তি করছিলুম সেটুকু মনে আছে এবং নমুনা-স্বরূপে নিম্নে উদধূত করা যেতে