পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

woS রবীন্দ্র-রচনাবলী versrie 6fieri প্রিয়নাথ সেনকে লিখিত । so : গানের কবিত্ব সম্বন্ধে যা লিখেছ সবই মানি। কেবল একটা কথা ঠিক নয়। মাথায় কবিতা সম্বন্ধে কোনাে থিওরিই নেই। গান লিখি, তাতে সুর বসিয়ে গান গাই— ঐটুকুই আমার আণ্ড দরকারআমার আর কবিত্বের দিন নেই। পূর্বেই বলেছি। ফুল চিরদিন ফোটে না-যদি ফুটত তো ফুটতই, তাগিদের কোনো দরকার হত না। এখন যা গান লিখি তা ভালো কি মন্দ সে কথা ভাববার সময়ই নেই। যদি বল। তবে ছাপাই কেন, তার কারণ হচ্ছে ওগুলি আমার একান্তই অন্তরের কথা— অতএব কারো-না-কারো অন্তরের কোনো প্রয়োজন ওতে মিটতে পারে- ও গান যার গাবার দরকার সে একদিন গেয়ে ফেলে দিলেও ক্ষতি নেই, কেননা আমার যা দরকার তা হয়েছে। যিনি গোপনে অপূর্ণ প্রয়াসের পূর্ণতা সাধন করে দেন তীরই পাদপীঠের তলায় এগুলি যদি বিছিয়ে দিতে পারি, এ জন্মের মতো তা হলেই আমার বকশিশ মিলে গেল ; এর বেশি এখন আমার আর শক্তি নেই। এখন মূল্য আদায় করব এমন আয়োজন করব কী দিয়ে, এখন প্রসাদ পােব সেই প্রত্যাশায় বসে আছি। তোমরা সেই আশীর্বাদই আমাকে কোরো-হাটের ব্যাপারী এখন দ্বারের ভিখারী হয়ে যেন দিন কাটাতে পারে। পথে ও পথের প্রান্তে । নির্মলকুমারী মহলানবিশকে লিখিত পত্র । {শাস্তিনিকেতন} ৮ আগস্ট ১৯১৯ গদ্যরচনায় আত্মশক্তির, সুতরাং আত্মপ্রকাশের, ক্ষেত্র খুবই প্রশস্ত। হয়তো ভাবীকালে সংগীতটাও বন্ধনহীন গদ্যের গৃঢ়তর বন্ধনকে আশ্রয় করবে। কখনো কখনো গদ্যরচনায় সুরসংযোগ করবার ইচ্ছা হয়। লিপিকা কি গানে গাওয়া যায় না ভািবছ ? QኞሺዎቚfroTኃ፻፵ | ኴr ♥ዳቸጻ5 $ $ • “, যুরোপের সংগীত প্ৰকাণ্ড এবং প্রবল এবং বিচিত্র, মানুষের বিজয়ীরথের উপর থেকে বেড়ে উঠছে। ধ্বনিটা দিগদিগন্তের বক্ষস্থল কঁপিয়ে তুলছে। বলে উঠতেই হয়-বাহবা! কিন্তু, আমাদের রাখালী বাঁশিতে যে রাগিণী বাজছে সে আমার একলার মনকে ডাক দেয় একলার দিকে সেই পথ দিয়ে যে পথে পড়েছে বঁাশবনের ছায়া, চলেছে জলভরা কলসি নিয়ে গ্রামের মেয়ে, ঘুঘু ডাকছে আমগাছের ডালে, আর দূর থেকে শোনা যাচ্ছে মাঝিদের সারিগান-মন উতল' করে দেয়, চোখটা ঝাপসা করে দেয় একটুখানি অকারণ চোখের জলে। অত্যন্ত সাদাসিধে, সেইজন্যে অত্যন্ত সহজে মনের আঙিনায় এসে আঁচল পেতে বসে।