পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় اها যায় শান্তিনিকেতন পত্র ১৩২৬ আশ্বিন-কার্তিক সংখ্যায় প্রকাশিত ‘প্রতিশব্দ’ প্রবন্ধে (বর্তমান গ্রন্থে প্রতিশব্দ ৪ : পূ: ৩৮৮-৩৯০) । সুধীরকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখিত পত্রে (৪ আষাঢ় ১৩৩৯) প্রশ্নটি আবার ওঠে। প্রথমত culture শব্দের বাংলা একটি করতে হবে...” (বর্তমান গ্রন্থে প্রতিশব্দ ১৪ - পৃ ৩৯৫-৩৯৬ দ্রষ্টব্য)। কিন্তু ইতিমধ্যে সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় সংস্কৃতি’ শব্দটির প্রতি রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এই প্রসঙ্গে সুনীতিকুমার পরবর্তীকালে লিখিয়াছিলেন : “...কালচার শব্দের মূলে আছে। লাতীনের cultura। কুলতুরা’ শব্দ ; এই শব্দ লাতীনের col ‘কোল’ ধাতু থেকে হয়েছে, coা অর্থে “কৃষ, চাষ করা, আবার যত্ন” করা’, ‘পূজা করা-ও হয়। culture-এর অনুরূপ প্রতিশব্দ ‘উৎকর্ষ-সাধন” বেশ হতে পারে, খালি ‘উৎকর্ষ’ শব্দও চলতে পারে। টানা ও পরে “লাঙ্গল টানা’ বা "চাষ করা’ অর্থে, ‘কৃষ’ ধাতু থেকে জাত কৃষ্টি” শব্দটিকে অর্থের দিক থেকে culture-এর প্রতিরূপ শব্দ মনে ক’রে, বাঙলায় ব্যবহার করা হতে থাকে বোধ হয়। গত তিরিশ বছরের ভিতরে। বঙ্কিমচন্দ্ৰ culture অর্থে “অনুশীলন' শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথও কৃষ্টি শব্দটি গতানুগতিকভাবে গ্রহণ করে থাকবেন- যদি তিনি স্বয়ং এই শব্দটি বাঙলায় চালিয়ে না থাকেন। কৃষ্টির অর্থগত পরিবর্তন বৈদিক আর সংস্কৃত সাহিত্যে যা দেখা যায়, তা থেকে কিন্তু বাঙলায় গৃহীত এর culture-অর্থ সমর্থিত হয় না। ..."চাষ"-অর্থে “কৃষ্টি" শব্দ পরবর্তী সংস্কৃতে মেলে— culture-অর্থে নয়। সেইজন্য রবীন্দ্রনাথ “কৃষ্টি” শব্দটি সম্বন্ধে একটু অস্বক্তিতে ছিলেন। ," ‘সংস্কৃতি’ শব্দ culture-এর প্রতিশব্দ হিসাবে পেয়ে রবীন্দ্রনাথ খুবই খুশী হন। এই শব্দটি বাঙলায় এখন থেকে ২৪/ ২৫ বছর আগে কেউ ব্যবহার করেছেন কি না জানি না। সংস্কার’ শব্দটি অবশ্য পাওয়া যায়, তা কিন্তু culture-অর্থে নয় ; কতকগুলি সামাজিক ধমীয় অনুষ্ঠান (যেমন, বিবাহ-সংস্কার), আর ‘সংস্কৃতি’ শব্দটি culture বা civilization অর্থে আমি পাই প্ৰথমে ১৯২২ সালে প্যারিসে, আমার এক মহারাষ্ট্ৰীয় বন্ধুর কাছে। culture-এর বেশ ভালো প্রতিশব্দ বলৈ শব্দটি আমার মনে লাগে। আমার বন্ধু শব্দটি পেয়ে আমার আনন্দ দেখে একটু বিস্মিত হন --তিনি বললেন যে তঁরা তো বহুকাল ধরে মারাঠী ভাষায় এই শব্দ ব্যবহার করে আসছেন। ১ ১৯২২ সালে দেশে ফিরে এসে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করি। সংস্কৃতি’ শব্দটির প্রতি তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করি। তিনি আগে থাকতেই এই শব্দটি পেয়েছিলেন কি না, জানি না— সম্ভবতঃ শব্দটি তার অবিদিত ছিল না। তবে আমার বেশ মনে আছে, culture-এর প্রতিশব্দ হিসাবে ‘সংস্কৃতি’ শব্দ সম্বন্ধে তিনি তীর সম্পূর্ণ অনুমোদন জ্ঞাপন করেন, কৃষ্টি” শব্দ আর ব্যবহার করা ঠিক হয় না, একথাও বলেন।”... . --সোনার বাংলা, শারদীয় সংখ্যা ১৩৫৩ অপিচ সংস্কৃতি শিল্প ইতিহাস’, ১৯৭৬, পৃ ৭-৮ ১৩ । [১] এই প্রসঙ্গে বিজয়চন্দ্র মজুমদারকে রবীন্দ্রনাথ যে পত্র (প্রবাসী, জ্যৈষ্ঠ ১৩৫০) লেখেন, তাহ এ স্থলে সংযোজিত হইল : আমাদের “শান্তিনিকেতন’ নামক ছোটো একটি পত্রে ‘বাংলা কথ্যভাষা’ প্রবন্ধে প্রসঙ্গক্রমে বাংলা শব্দ উচ্চারণ লইয়া দুই-একটা কথা বলিয়াছিলাম এবং সেইসঙ্গে ব্যাকরণ ঘটিত মন্তব্যও কিছু ছিল। আপনি তাহা লইয়া 'প্রবাসীতে যে মন্তব্য লিখিয়া পাঠাইয়াছেন তাহার প্রতিলিপিখানি ১. দ্রষ্টব্য, কালচার ও সংস্কৃতি ; ২ S8 S