পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় Vatra সমস্ত মনটা মাতিয়া আছে, কাজকর্মের কোনো দাবিতে কিছুমাত্র কান দিতেছি না- সেও শরতের দিনে H হেলাফেলা সারাবেলা এ কী খেলা আপন-মনে। ] Ο Σ একবার মাঘোৎসবে {১৮৮৭] সকালে ও বিকালে আমি অনেকগুলি গান তৈরি করিয়াছিলাম। তাহার মধ্যে একটা গান- ‘নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে।’ পিতা তখন টুচুড়ায় ছিলেন। সেখানে আমার এবং জ্যোতিদাদার ডাক পড়িল। হরমোনিয়মে জ্যোতিদাদাকে বসাইয়া আমাকে তিনি নূতন গান সাব-কটি একে একে গাহিতে বলিলেন। কোনো কোনো গান দুবারও গাহিতে হইল। গান গাওয়া যখন শেষ হইল। তখন তিনি বলিলেন, “দেশের রাজা যদি দিক হইতে যখন তাহার কোনো সম্ভাবনা নাই, তখন আমাকেই সে কাজ করিতে হইবে।” এই বলিয়া তিনি একখানি পাঁচ-শো টাকার চেক আমার হাতে দিলেন। বিদেশী সংগীত ব্ৰাইটনে থাকিতে (১৮৭৮] সেখানকার সংগীতশালায় একবার একজন বিখ্যাত গায়িকার গান শুনিতে গিয়াছিলাম। তঁহার নামটা ভুলিতেছি— মাডাম নীলসন ১ অথবা মাডাম আলবানি । হইবেন। কণ্ঠস্বরের এমন আশ্চর্য শক্তি পূর্বে কখনো দেখি নাই! আমাদের দেশে বড়ো বড়ো ওস্তাদ গায়কেরাও গান গাঁহিবার প্রয়াসটাকে ঢাকিতে পারেন না- যে-সকল খাদসুর বা চড়াসুর সহজে তঁহাদের গলায় আসে না, যেমন-তেমন করিয়া সেটাকে প্রকাশ করিতে তঁহাদের কোনো লজ্জা নাই। কারণ, আমাদের দেশের শ্রোতাদের মধ্যে যাহারা রসজ্ঞ তীহারা নিজের মনের মধ্যে নিজের বোধশক্তির জোরেই গানটাকে খাড়া করিয়া তুলিয়া খুশি হইয়া থাকেন ; এই কারণে তাহারা সুকণ্ঠ গায়কের সুললিত গানের ভঙ্গিকে অবজ্ঞা করিয়া থাকেন; বাহিরের কর্কশতা এবং কিয়ৎপরিমাণে অসম্পূর্ণতাতেই আসল জিনিসটার যথার্থ স্বরূপটা যেন বিনা আবরণে প্রকাশ পায়। এ যেন মহেশ্বরের বাহা দারিদ্র্যের মতো, তাহাতে র্তাহার ঐশ্বৰ্য নগ্ন হইয়া দেখা দেয়। যুরোপে এ ভাবটা একেবারেই নাই। সেখানে বাহিরের আয়োজন একেবারে নিখুঁত হওয়া চাই— সেখানে অনুষ্ঠানের ত্রুটি হইলে মানুষের কাছে মুখ দেখাইবার জো থাকে না। আমরা আসরে বসিয়া আধা ঘণ্টা ধরিয়া তানপুরার কান মলিতে ও তবলাটাকে ঠকাঠক শব্দে হাতুড়ি-পেটা করিতে কিছুই মনে করি না। কিন্তু, য়ুরোপে এই সকল উদ্যোগকে নেপথ্যে লুকাইয়া রাখা হয়— angunaunanganapan è Christine Nilsson (1843-1922). Swedish prima donna a Dame Albani (1852-1930). Canadian prima donna SW 88