পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अभांछ VOoе করিতে বাধ্য হইয়াছিল। জজ মকদ্দমা ডিসমিস করিয়া দিলেন। হাইকোর্টে আপিল হইল। উভয়পক্ষে বিস্তর ব্যারিস্টর নিযুক্ত হইল। তিন মাস মকদ্দমার পর জজেরা সাব্যস্ত করিলেন কৌলিলে আপিল করিলেন। সেখানে বিচারক রায় দিলেন, ‘হী, সত্য সত্যই বেণীমাধবের প্রতি অন্যায় ব্যবহার করা হইয়াছে। সে যখন বারো বৎসর ধরিয়া নিয়মিত আড়াই শত জুতা খাইয়া । আসিতেছে, তখন তাহাকে একদিন দুই শত তেতাল্লিশ জুতা মারা অতিশয় অন্যায় হইয়াছে। আর জুতা ছেড়ার ওজর কোনো কাজেরই নহে।” বেণীমাধব বুক ফুলাইয়া বলিল, হাঁহী, আমার সঙ্গে চালাকি|” সাধারণ লোকেরা বলিল, “না হইবে কোন! কত বড়ো লোক? উহাদের সহিত পারিয়া উঠিবে কেন?” এই উপলক্ষে হিন্দু পেট্রিয়টে একটা আর্টিকেল লিখিত হয়; তাহাতে অনেক উদাহরণসমেত উল্লেখ থাকে যে, ইংরাজ জুতা-বৰ্দারেরা আমাদের বড়ো বড়ো সম্রান্ত নোটিব কর্মচারীদিগের মান-অপমানের প্রতি দৃষ্টি রাখে না। যাহার যত বরাদ তাহাকে তাহার কম দিতে শুনা যায়। অতএব আমাদের মতে বাঙালি জুতাবৰ্দার নিযুক্ত হউক। কিন্তু এক কথায় তাহার সে-সমস্ত যুক্তি খণ্ডিত হইয়া যায়- যদি বাঙালি জুতাবৰ্দার নিযুক্ত করা যায়। তবে তাহদের জুতাইবে কে?” আজকাল বঙ্গদেশে একমাত্ৰ আশীৰ্বাদ প্রচলিত হইয়াছে, অর্থাৎ “পুত্রপৌত্রানুক্রমে গবর্নমেন্টের জুতা ভোগ করিতে থাকো, আমার মাথায় যত চুল আছে তত জুতা তোমার ব্যবস্থা হউক।” সেই আশীৰ্বাচনের সহিত এই প্রবন্ধের উপসংহার করি।” ভারতী ČEgb y bryr চীনে মরণের ব্যবসায় ২ একটি সমগ্ৰ জাতিকে অর্থের লোভে বলপূর্বক বিষপান করানো হইল; এমনতরো নিদারুণ ঠগীবৃত্তি কখনো শুনা যায় নাই। চীন কাদিয়া কহিল, “আমি আহিফেন খাইব না।” ইংরাজ বণিক কহিল, “সে কি হয়?” চীনের হাত দুটি বধিয়া তাহার মুখের মধ্যে কামান দিয়া অহিফেন ঠাসিয়া দেওয়া হইল; দিয়া কহিল, “যে অহিফেন খাইলে তাহার দাম দাও।” বহুদিন হইল ইংরাজেরা চীনে এইরূপ অপূর্ব বাণিজ্য চালাইতেছেন। যে জিনিস সে কোনো মতেই চাহে না, সেই জিনিস তাহার এক পকেটে জোর করিয়া গুজিয়া দেওয়া হইতেছে ও আর-এক পকেট হইতে তাহার উপযুক্ত মূল্য তুলিয়া লওয়া হইতেছে। অর্থ সঞ্চায়ের এরূপ উপায়কে ডাকাইতি না বলিয়া যদি বাণিজ্য বলা যায়, তবে সে নিতান্তই ভদ্রতার খাতিরে। যে জাতি আফ্রিকার দাসত্ব-শৃঙ্খল মোচন করিয়া S. "This evening's Englishman has discovered the secret of correctly treating the people of Bengal. It says, "Kick them first and then speak to them."-Indian Mirror. ( is wife কোনো বিজাতীয় কাগজ হাটের মধ্যে এরূপ জুতা মাৱিতে সাহস করে, সে জাতি উপরি-প্রকাশিত প্ৰবন্ধ পড়িয়া বিস্মিত হইবে না। বোধ হয়, লেখক রহস্যচ্ছলে প্ৰবন্ধটি লিখিয়াছেন, কিন্তু উহা সত্যের এত কাছ ঘেঁবিয়া গিয়াছে যে, বাঙালি জাতির পক্ষে উহ্য রহস্যাত্মক হইবে না। আজ অন্য কোনো দেশে যদি কোনো কাগজ ওইরাপ অপমানের আভাস মাত্র দিত, তাহা হইলে দেশবাসীরা তৎক্ষণাৎ নানা উপায়ে তাহার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করিত। কিন্তু এতদিন হইতে আমরা জুতা হজম করিয়া আসিতেছি যে, আজ উহা আমাদের নিকট গুরুপাক বলিয়া ঠেকিতেছে না।-সং । S. The Indo-British Opium Trade by Theodore Christlieb DD. Ph.D. Translated from the German by David B. Croom, M.A.