পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমাজ · 8oዒ এত আড়ম্বর করিয়া আমাদের সেই গুণগুলির চর্চা করিবার আবশ্যক দেখিতেছি না। তবে যদি কাজ করাই ইহার মুখ্য উদ্দেশ্য হয় ও অসমর্থ পক্ষে ভিক্ষা চাওয়া ইহার গীেণ উদ্দেশ্য হয়, তবেই ইহার দ্বারা আমাদের দেশের স্থায়ী উন্নতি হইবে। নচেৎ ঠিক উন্নতি হইতেছে বলিয়া মনে । झाली हे ना का 'कालिन हे ड्यान त्या अक्ष्या ERò a लाब्री काऊिँ ४२०० টােনহিলের তামাশা সেদিন টাউনহলে একটা মস্ত তামাশা হইয়া গিয়াছে। দুই-চারিজন ইংরাজে মিলিয়া আশ্বাসের ডুগডুগি বাজাইতেছিলেন ও দেশের কতকগুলি বড়োলোক বড়ো বড়ো পাগড়ি পরিয়া নাচন আরম্ভ করিয়া দিয়াছিলেন। দেশের লোক অবাক হইয়া গেল। শীতের সময় কলিকাতায় অনেক প্রকার তামাশা আসিয়া থাকে, সার্কস, অপেরা ইত্যাদি। কিন্তু বড়োলোকের নাচনী সচরাচর দেখা যায় না। সাহেব বলিল, তাই, তাই, তাই; আমনি বড়ো বড়ো খোকার হাততালি দিতে লাগিল! কিন্তু ভালো দেখাইল না। কারণ, নাচন কিছু সকলকেই মানায় না। তোমাদের এ বয়সে, এ শরীরে এত সহজে যদি নাচিয়া ওঠ, সে একটা তামাশা হয় সন্দেহ নাই, রাস্তার লোকেরা হাে হাে করিয়া হাসিতে থাকে, কিন্তু তাই বলিয়া আপনার লোকেরা তো আর হাসিতে পারে না! তাহাদের নিতান্ত লজ্জা বোধ হয়, দুঃখ হয়, ধিক ধিক করিয়া মুখ ফিরাইয়া, নতশির হইয়া চলিয়া যায়, সুতরাং ইহাকে ঠিক তামাশা বলা যায় না! কিন্তু যাই বল, সাহেবদিগকে ধন্য বলিতে হয়। যাহারা উইলসনের সার্কস দেখিতে গিয়াছেন র্তাহারা সকলেই দেখিয়াছেন ইংরাজ ঘোড়া নাচাইয়াছেন এবং অরণ্যের বড়ো বড়ো প্ৰাণীদের পোষ মানাইয়াছেন, কিন্তু তাহারা যে বাংলার গোটকতক জমিদার ধরিয়া আনিয়া এত সহজে বশ করিতে পারিকেন এ কে জানিত ? বশ করা কিছু আশ্চর্য নয়, কিন্তু ইহার কিছু পূর্বেই যে লাথি বঁটা বৈ আর কিছু খোরাকি জোটে নাই, সেগুলি যে এত শীঘ্ৰ হজম করিয়া ফেলিয়া দানার লোভে তোমরা উহাদের কাছে ঘোঁসিয়া যাইতেছ। এইটেই আশ্চর্য! ডাক্লয়িন বলিয়াছেন, প্রাণীর ক্রমোন্নতি সহকারে মানুষের কাছাকাছি আসিয়া তাহার লেজ খসিয়া যায়। যেমন শারীরিক লেজ খসিয়া যায়, তেমনি তাহার আনুষঙ্গিক মানসিক লেজটাও খসিয়া যায়। মান-অপমান তুচ্ছ করিয়া, লাথি বঁটা শিরোধার্য করিয়া কেবল একটুখানি সুবিধার অনুরোধে বাপাস্তবাগীশের গা ঘোঁসিয়া গেলে মানসিক লেজের অস্তিত্ব প্রকাশ পায়। সে জিনিসটা যদি থাকে তো চাপিয়ে রাখো, অত নাড়িতেছ। কেন? ওটা দেখিতে পাইলে পণ্ডিতেরা ! তোমাদিগকে হীন ও মহৎ প্রাণীদের মধ্যস্থিত missing link বলিয়া গণ্য করিতেও পারে। তোমাদের একটা কথা আছে যে, “কাহারও সহিত এক বিষয়ে মতভেদ হইলে অন্য বিষয়ে মতের ঐক্য সত্ত্বেও মিশিতে বাধা কী?” সে তো ঠিক কথা। কিন্তু মতের আবার ইতারবিশেষ আছে। 'ক' কখন কহিল, সূর্য পশ্চিমে ওঠে, তখন ‘খ’য়ের সহিত এ সম্বন্ধে তাহার সম্পূর্ণ মতভেদ সত্ত্বেও কয়ে ‘খ’য়ে গলাগলি ভাব থাকার আটক নাই। কিন্তু যখন ‘কায়ের মত ‘খ’ । এবং তাহার বাপ-পিতামহ সকলেই চাের, মিথ্যাবাদী ও প্রবঞ্চক, তখন এ মতভেদ সত্ত্বেও • উভয়ের আর ভালোরূপ বনিবনাও হওয়া সম্ভব নহে। ] { যাহারা দেশকে অপমান করে দেশের কোনো সুপুত্র তাহদের সহিত সম্পর্ক রাখিতে পারে ।