পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Baby রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী 86 আমি যেন কোন এক অপূর্ব পর্বতে বালুময় ঢালুভাগ পদমূল হতে ক্ৰমাগত নেমে গিয়ে মিশেছে। তলায়। BV ধুধু করে উপত্যকা, অতল অপাের, অসংখ্য দানব যেন তাহার ভিতরে, করিতেছে হুড়াহুড়ি- তুমুল ব্যাপার, মরীয়া হইয়া যেন মেতেছে সমরে। 8Գ ফেরো গো ও পথ থেকে কল্পনা সুন্দরী ওই দেখো যাদকুল নিতান্ত আকুল, নিতান্তই মারা যায় মরুর উপরি, হেরে কি অন্তর তব হয় নি ব্যাকুল ? 8Եr সেই মহা জলরাশি আনো তুরা ক’রে, ঢেকে দাও এই মহা মরুর আকার, অমৃত বর্ষিীয়া যাক ওদের উপরে; শান্তিতে শীতল হােক সকল সংসার।’ ক্ষুদ্রতম অদৃশ্য কীটাণু হইতে বৃহৎ তিমি মৎস্য পর্যন্ত এবং আণুবীক্ষণিক উদ্ভিদ হইতে সহস্ৰ হস্ত দীর্ঘ অ্যালজি (Algae) নামক উদ্ভিদ পর্যন্ত এই সমুদ্রের গর্ভে প্রতিপালিত হইতেছে। এই সমুদ্রগর্ভে যত প্ৰাণী আছে, স্থল-প্রদেশে তত প্ৰাণী নাই। সমুদ্রে এক প্রকার অতি নিকৃষ্টতম শ্রেণীর প্রাণী দেখিতে পাইবে। তাহারা উদ্ভিজ্জ শ্রেণী হইতে এক সোপান মাত্র উন্নত। তাহাদের শারীর যন্ত্র এত সামান্য যে, সহসা তাহাদের প্রাণী বলিয়া বোধ হয় না। ইহারাই পৃথিবীর প্রাণীসৃষ্টির মধ্যে আদিম সৃষ্টি বলিয়া স্থিরীকৃত হইয়াছে। পৃথিবী যত প্ৰাচীন হইতে লাগিল, ততই জটিল শরীর-প্রকৃতি-বিশিষ্ট জীবের উৎপত্তি হইল, অবশেষে তাহার উৎকর্যের সীমা মানুষ্যে আসিয়া দাঁড়াইয়াছে। কেহ মনে করেন, এইখানেই আসিয়া শেষ হইল, আর অধিক অগ্রসর হইবে না, কিন্তু কে বলিতে পারে, এই মনুষ্যালয়ের উপর আর-এক স্তর মৃত্তিকা পড়িয়া যাইবে না, ও এই মনুষ্য-সমাজের সমাধির উপর আর-একটি উন্নততর জীবের উৎপত্তি হইবে না। পৃথিবীর প্রথম অবস্থায় উদ্ভিদ ভিন্ন আর কিছুই ছিল না, তাহার মধ্যে প্রথমে আবার নিকৃষ্টতম উদ্ভিদের জন্ম হয়। যদি কিয়ৎপরিমাণে জল খোলা জায়গায় কোনো পাত্রে রাখিয়া দেওয়া হয়, তবে শীঘ্রই দেখা যায়, তাহার উপর পীত ও হরিৎ বর্ণের অতি সূক্ষ্ম আবরণ পড়িয়াছে, অণুবীক্ষণ দিয়া দেখিতে গেলে দেখা যাইবে, সেগুলি আর কিছুই নহে, সহস্ৰ সহস্র উদ্ভিদ-পদাৰ্থ ভাসিতেছে। তাহার পরেই সহস্র কীটপু দেখা যাইবে, তাহারা দলবদ্ধ হইয়া সাঁতার দিতেছে ও সেই উদ্ভিজ্জ আহর করিয়া প্ৰাণ ধারণা করিতেছে। এই উদ্ভিদ-পদার্থ যাহা আমরা অণুবীক্ষণের সাহায্য ব্যতীত দেখিতে পাই না, তাহাই হয়তো তাহাদের নিকটে একটি বৃহৎ রাজ্য। পরে আর-এক দল কীটপু