পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* ?>の ब्रदोश-ख़ानावर्दी বিলাতের উদ্যানকারদের মধ্যে একটা প্ৰবাদ প্রচলিত আছে যে, যেখানে বিলাতি বেণ্ডনের গাছ রোপণ করা হয়। সেখানে পোকামাকড় আসিতে পারে না। যে গাছে পোকা ধরিবার সম্ভাবনা আছে তাহার চারি পাশে বিলাতি বেগুন রোপণ করিয়া গাছকে রক্ষা করা যায়। এটা অনায়াসেই পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারা যায়। পণ্ডিতবর টাইলর সাহেব বলেন- পরীক্ষা করিয়া দেখিলে উদ্ভিদদের কার্যেও কতকটা যেন স্বাধীন বুদ্ধির আভাস দেখিতে পাওয়া যায়। বৃক্ষ নিতান্ত যে জড়যন্ত্রের মতো কাজ করে তাহা নহে, কতকটা যেন বিচার-বিবেচনা করিয়া চলে। টাইলর সাহেব এই বিষয় লইয়া অনেক বৎসর ধরিয়া পরীক্ষা করিয়া আসিতেছেন। তিনি বলেন কৃত্রিম বাধা স্থাপন করিলে গাছেরা তাহা নানা উপায়ে অতিক্রম করিবার চেষ্টা করে, এমন-কি, নিজের সুবিধা অনুসারে পল্লব সংস্থানের বন্দোবস্ত পরিবর্তন করিয়া থাকে। এ বিষয়ে তিনি অন্যান্য নানাবিধ প্রমাণ প্রয়োগ করিয়া সম্প্রতি একটি বক্তৃতা দিয়াছেন। ত্ৰিবাকুরের উপকূলে নারাকাল ও আলেপিতে যে রন্দর আছে, সেখানে সমুদ্র অতিশয় প্রশান্ত। র দিকে যখন ঝড় ঝঙ্কা উপপ্লব তখনও এ বন্দর দুটির শাস্তিভঙ্গ হয় না। ইহার একটি কারণ আছে। ইংরাজিতে প্রাচীনকাল হইতে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে যে, ক্ষুব্ধ সমুদ্রে তেল ঢালিলে তাহা শান্ত হয়। অনেকে তাহা অমূলক মনে করিতেন। কিন্তু সম্প্রতি পরীক্ষা করিয়া দেখা হইয়াছে যে, বাস্তবিকই তেল ঢালিলে জলের ঢেউ থামিয়া যায়। কিছুদিন হইল একটি প্রস্তাব পাঠ করিয়াছিলাম তাহাতে প্ৰত্যেক জাহাজে প্রচুর পরিমাণে তৈল রাখিতে পরামর্শ দেওয়া হইয়াছিল; ঝড়ের সময় অল্পে অল্পে সেই তৈল জাহাজের দুই পার্শ্বে ঢালিতে হইবে। নারাকাল এবং আলেপি বন্দরের সমুদ্রতল হইতে ক্রমাগত পেট্রোলিয়ম তৈল উখিত হইতেছে। কালিফনিয়াতীরের নিকটবতী একস্থানের সমুদ্রে এইরূপ তৈল-উৎস আছে। সেখানকার সমুদ্রও শান্ত থাকে। আমেরিকার শিল্পী ও মজুরদের মধ্যেও বহুল পরিমাণে বিদ্যাচর্চা প্রচলিত আছে। এইজন্য সেখানকার হাতের কাজ অতি সুচারুরাপে সম্পন্ন হয়। য়ুনাইটেড স্টেটুস-এ দুই লক্ষ পাঁচিশ হাজার। আটশত প্ৰকাশ্য বিদ্যালয় আছে, অর্থাৎ প্রত্যেক দুইশো লোকের মধ্যে একটি করিয়া বিদ্যালয় আছে। একমাত্র মাসাচুসেটস প্রদেশে দুই হাজার পুস্তকালয় আছে, অর্থাৎ প্রত্যেক আটশত লোকের মধ্যে একটি করিয়া পুস্তকালয় আছে। অনেকে মনে করেন বিদ্যাশিক্ষায় শিল্পকাজের ব্যাঘাত করে, কিন্তু তাহা ভ্ৰম। বিদ্যাশিক্ষায় সকল কাজেরই সহায়তা করে। ফরাসিপ্রশীয় যুদ্ধে জর্মনদের যে জিত হইল তাহার একটা প্রধান কারণ তাহারা শিক্ষিত- এই নিমিত্ত তাহারা যুদ্ধান্ত্র ব্যবহার করিতে অধিকতর নিপুণতা লাভ করিয়াছিল। আমাদের বিশ্বাস ছিল, যাহাদের এক ইন্দ্ৰিয় অসম্পূর্ণ তাহদের অন্য ইন্দ্ৰিয় তীক্ষতার হয়। কিন্তু এ কথা সকল স্থানে খাটে না। দেখা গিয়াছে যাহারা বধির তাহারাই অধিকাংশ অন্ধ এবং যাহারা অন্ধ তাহারাই অধিকাংশ বধির। কার্বনিয়ে নামক একজন ফরাসি পণ্ডিত বলেন যে, গঙ্গার নিকটবতী জলাশয়ে একপ্রকার অতি ক্ষুদ্র মৎস্য আছে, তাহারা পাখির ন্যায় জলে নীড় প্রস্তুত করে। ইহারা দেখিতে অতি সুন্দর, রামধনুর ন্যায় নানা বর্ণেরঞ্জিত। ইহারা জলের মধ্য হইতে একপ্রকার উদ্ভিদ মুখে করিয়া জলের