পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৭৬

des झौका-झष्नांबी রেলোয়ের কর্মচারীগণ বিনা টিকিটে সেকেন্ড ক্লাসে ভ্ৰমণ করিতে পারেন। তাহারা চিরদিন পরের টিকিট সমালোচনা করিয়াই কালব্যাপন করিয়াছেন, নিজে একখানি টিকিটও ক্রয় করেন। নাই। ইহা কি সত্য নয় যে, তিনি নিজে আপনাকে যত বড়ো ব্যক্তিই মনে করুন-না, যতক্ষণে না। তিনি ট্যাকের পয়সায় টিকিট কিনিবেন, ততক্ষণে তিনি চতুর্থ শ্রেণীর আরোহী অপেক্ষাও অল্প সম্মান পাইবার যোগ্য। কিন্তু এই সমালোচকবর্গ যে বিনা পয়সায় দ্বিতীয় শ্রেণীর টিকিটক্ৰেতাদিগের সমতুল্য সম্মান পাইয়া থাকেন, ও অহংকারে এতখানি কঁপিয়া উঠেন যে, পাঁচটা আরোহীর জায়গা একা জুড়িয়া বসেন, ইহা সর্বতোভাবে ন্যায়-বিরুদ্ধ। অনেকে বিনা টিকিট আছে, কেহ সন্দেহও করে না, জিজ্ঞাসাও করে না। গার্ড দেখিল, তাহার। পাকা দাড়ি, পাকা চুল, অনেকদিন হইতে ফাস্ট ক্লাসে চড়িয়া আসিতেছেন; তঁহাকে টিকিটের কথা জিজ্ঞাসা করিতে প্রবৃত্তিও হইল না। সাহসও হইল না। কাহারো বা হীরার আংটি, ঘড়ির চেন, জরির তাজ দেখিল- আর টিকিট দেখিল না। সাহিত্য রেলোয়ে কোম্পানিতে এইরূপ বহুবিধ অনিয়ম ঘটিতেছে; আমি বরাবর বলিয়া আসিতেছি, যত বড়ো লোকই হউন-না-কেন টিকিট নিতান্ত । মনোযোগ সহকারে আলোচনা না করিয়া কাহাকেও ছাড়া উচিত নহে। কিন্তু অত পরিশ্রম করে। কে? আবার, অধিক কড়াকড়ি করিলেও নিন্দা হয়। যাহারা টিকিট কিনিয়া ট্রেন মিস করেন, তাহাদের জন্য বড়ো মায়া করে। র্তাহারা ঠিক সময়ে আসেন নাই। সময়মাফিক আসিয়াছিল বলিয়া কত থার্ড ক্লাসের লোক গাড়িতে উঠিল, এমনDBS BB BD D DD DDDDBD gDBDBD DDS DBBBB DBDB DDB BB DBB ক্লাসের লোক পড়িয়া রহিলেন। যাহা হউক, তাহদের জন্য ভবিষ্যৎ আছে, দ্বিতীয় ট্রেন আসিলে তাহারা চড়িতে পাইবেন। কিন্তু ইহাদের অনেকে বিরক্ত, ক্ষুব্ধ হইয়া বাড়িতে ফিরিয়া যান, স্টেশনে অপেক্ষা করেন না। এইরূপে কত প্ৰথম শ্রেণীর ব্যক্তি বিরক্ত হইয়া তাহদের টিকিট ছিড়িয়া ফেলিয়াছেন, পকেটে পয়সা আনিয়া টিকিট ক্রয় করেন নাই, তাহদের সংখ্যা গণনা কে করিবে? জেফ্রি যে ট্রেনে গার্ড ছিলেন, বাইরন যে ট্রেনে আরোহী ছিলেন, সেই ট্রেন ধরিবার জন্য ওয়ার্ডস্বর্থ ও শেলী স্টেশনে উপস্থিত হইলেন, কিন্তু তখন গাড়ি দ্রুতবেগে চলিয়াছে; তাহারা ট্রেন মিস করিলেন; দ্বিতীয় ট্রেন আসিলে পর তাহারা স্থান পাইলেন। আমাদের বঙ্গীয় সাহিত্যে সম্প্রতি যে ট্রেন চলিতেছে, অনেক বড়ো বড়ো ব্যক্তি সে ট্রেনটা মিস করিয়াছেন। কিন্তু তাহারা কেন নিরাশ হইতেছেন? দশ মিনিট সবুর করুন আর-একখানা ট্রেন এল বলে! বঙ্গীয় সাহিত্য ট্রেনে ফাস্ট সেকেন্ড ক্লাসে আরোহী নিতান্তই কম, অন্যান্য ক্লাসে অত্যন্ত ভিড়। এই নিমিত্ত গার্ডেরা বাছিয়া বাছিয়া দুই-এক জনকে ফাস্ট ক্লাসে বসিতে দেয়। তাহারা যদিও ফাস্ট ক্লাসে বসিয়াছে, তথাপি গার্ড জানে যে, তাহারা থার্ড ক্লাসের আরোহী। তাহদের বলে, বাংলার মিলটন, বাংলার বাইরন, বাংলার ফসেট ইত্যাদি, অথচ মনে মনে সকলেই জানে যে, তাহারা মিলটন, বাইরন, ফসেটের সমতুল্য নহে; অনুগ্রহ করিয়া এক ক্লাসে বসিতে দিয়াছে মাত্র। কিন্তু এমন করিবার আবশ্যক কী? ইহাতে বুদ্ধিমান লোকের নিতান্ত সংকোচ জন্মিবার কথা। তাহদের জন্য স্বতন্ত্র গাড়ির বন্দোবস্ত করিয়া দিলেই তো ভালো হয়। বঙ্গীয় সাহিত্য কোম্পানিতে, খুচরা, টুকরা মাল-বোঝাই গোটা কতক মালগাড়ি অর্থাৎ খবরের কাগজ, একরকম কেশ চলিতেছে। কিন্তু ভাব-আরোহীদিগের জন্য আরোহী শকট অর্থাৎ মাসিক প্ৰবন্ধ-পত্ৰ ভালো চলিতেছে না। গাড়ি চলিবার জন্য এজিনে শ্বেতবর্ণ খনিজ কয়লার আবশ্যক। কোথায় পাইবে বলে! সাহিত্য এজিন কেন, দেশে সহস্ৰ এজিন বেকার পড়িয়া আছে ভারতবর্ষের রাজা-গজে রানী-গঞ্জে কয়লা যে নাই, এমন নহে, কিন্তু এত গভীর অকালে নিহিত যে, সঙ্কর মাথা খুঁড়িলেও পাইবার কোনো সম্ভাবনা নাই। আর এক উদ্যমের কয়লা আছে, তাহাও বাংলা দেশে এমন বিরল ও বাংলার কয়লায় এত অধিক ধোঁয়া হয় ও এত কম আগুণ