পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্ৰন্থসমালোচনা boa নি, বিস্তুত সংগ্রহ ও সরল অনুবাদের ভাষায় আমরা নিতান্ত গ্ৰীত হইয়াছি। বাংলায় এ পুস্তক আমরা যতগুলি দেখিয়াছি, তন্মধ্যে এখনি সর্বোৎকৃষ্ট। কুসুম-কানন। প্রথম ভাগ। শ্ৰীকায়কোবাদ প্রণীত। এই গ্ৰন্থখানিতে দুটি-একটি মিষ্ট কবিতা আছে। সরলা। শ্ৰীযোগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় প্রণীত। প্ৰায়শ্চিত্ত। শ্ৰীহরিপদ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীত। এই দুইখানি গ্রন্থ ক্ষুদ্রায়তন সরল সামাজিক উপন্যাস। ইহাদের সম্বন্ধে বিশেষ বক্তব্য কিছুই নাই। আদর। (প্রিয়তমার প্রতি)। শ্ৰীকল্পনাকান্ত গুহ প্রণীত। ইহা পড়িয়া প্রিয়তমা সন্তুষ্ট হইতে পারেন। কিন্তু পাঠকেরা সন্তুষ্ট হইবেন না। উৰ্মিলা-কাব্য। শ্ৰীদেবেন্দ্রনাথ সেন প্রণীত। মূল্য চারি। আনা। এই কাব্যখনির বিষয় নূতন ও কবিতাপূর্ণ। ইহাতে উৰ্মিলার দুঃখ বর্ণিত হইয়াছে। উৰ্মিলা বনবাসিনী সীতাকে পত্র লিখিতেছেন। এই ক্ষুদ্র পত্ৰখানিতে উৰ্মিলার চরিত্র ও উর্মিলার মনোভাব সুন্দর বিকশিত হইয়াছে। বিরাহিণী উৰ্মিলা প্রাসাদের উদ্যানে বিচরণ করিতে করিতে কল্পনাকুহকে নিজের চারি দিকে নানাবিধ মায়াজাল রচনা করিতেছেন ও ভাঙিতেছেন, এ ভাবটি সুন্দর হইয়াছে। স্থানে স্থানে ইহাতে সুন্দর কবিতা আছে। অধরে চুম্বিলা দেবী, হায় সে চুম্বননিচল যমুনাজলে চন্দ্র-কার-লেখা পড়ে গো নিঃশব্দে যথা, অথবা যেমতি নিশির শিশির পাত; নীরব, মৃদুল! পত্র শেষ করিয়া পত্র সম্বন্ধে উৰ্মিলা কহিতেছেন পাঠ করি মনোসাধে, পরম কৌশলে নিদ্রিত নাথের বক্ষে নিঃশব্দ চরণেরাখিয়া আসিয়ো দিদি করি গো বিনতি । নিদ্রান্তে চকিতে যবে হেরিয়া এ লেখা, শুদ্ধাবোন “কে আনিল!” কহিয়ে তাহরে, ‘স্বৰ্গ হতে ফেলেছেন বুঝি রতিদেবী চেতাইতে সুকঠিন অপ্রেমিক জনে, নহে মানবের কাজ, দেবের এ লীলা।” দাও গো বিদায় তবে আসিছে মন্থরা। ভক্তিপূর্ণ নমস্কার জানায়ো শ্ৰীরামে, য়ো তাহারে দেবি, “দেব রঘুমণি